এরপর থেকেই হজরত আলীকে প্রাণে মারার পরিকল্পনা আঁকেন কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম। নানাভাবে তাকে দিতে থাকেন হত্যার হুমকি।
পরে নিজ এলাকায় ফিরে আসেন। শুরু করেন বালুর ব্যবসা। সময়ের ব্যবধানে হজরত আলী শক্তি সঞ্চয় করেন। কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামের বিভিন্ন কাজকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়ান। শেষমেষ হজরত আলীকে হত্যার মাধ্যমে সেই কাঁটা দূর করেন কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম।
হজরত আলী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার শাওন বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুজ্জামানের আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। এর মধ্যে দিয়ে হজরত আলী হত্যাকণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়।
পাশাপাশি শাওন তার জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের পুরো পরিকল্পনা তুলেন বিচারকের কাছে। গ্রেফতারকৃত শাওন শহরের সুলতাগঞ্জ পাড়ার আব্দুস সামাদের ছেলে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) আসলাম আলী বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, হজরত আলীকে হত্যায় অংশ নেয় আট কিলার। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম কিলারদের নিয়ে সকালের দিকে মন্ডলপাড়ায় তার বাড়িতে বৈঠক করেন। বৈঠক থেকে পথের কাঁটা হজরত আলীকে সরে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠক শেষে কাজে নেমে পড়ে কিলাররা।
রোববার (১৬ এপ্রিল) দুপুরের ঘটনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী হজরত আলীর বাড়িতে পাঠানো হয় কিলার সুজনকে। ডেকে তাকে বাড়ি থেকে বের করা হয়। পরে কাউন্সিলরের কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসা হয়।
এসময় বাকিরা তাকে ঘিরে ফেলে। হজরত আলী কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার শরীরে বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রের আঘাত পড়তে থাকে। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান, যোগ করেন ওসি-তদন্ত আসলাম আলী।
ঘটনার পরদিন নিহতের মা মেরিনা বেগম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় পৌরসভার ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম ছাড়াও ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়।
ওসি (তদন্ত) আসলাম আলী বাংলানিউজকে আরো জানান, ঘটনার মূলহোতা কাউন্সিল জহুরুল ইসলামসহ অন্য ঘাতকরা পলাতক রয়েছেন। তবে তাদের ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
এমবিএইচ/জেডএস