প্রায় ১৫ কিলোমিটারের বাঁধের অপর পাশ ঘেঁষে প্রবহমান খালটি তাহিরপুর হয়ে সুরমায় গিয়ে মিশেছে। তাই অকাল বন্যায় পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় নিম্নাঞ্চল।
অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল থেকে ফসলের রক্ষাকবচ হিসেবে বেঁকা বাদ ও লক্ষ্মিনী বাঁধ, হরিমনিয়া বাঁধ করা হয় সরকারি অর্থায়নে। কিন্তু পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধগুলো বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়ে আর পানি ঢুকে তলিয়ে যায় হাওরের বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। সেই সঙ্গে স্বপ্নভঙ্গ হয় কড়চার হাওর পাড়ের ৩৫ গ্রামের কৃষকের স্বপ্ন।
হাওরপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বাংলানিউজকে বলেন, বরাদ্দ প্রচুর থাকলেও পাউবো কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে সঠিকভাবে বাধ নির্মান হয়নি। ফলে জমির আইলের মতো বাধ প্রথম ধাক্কাতেই ভেঙে যায়, এমনটি জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদকর্মী স্বপন কুমার বর্মন।
কচড়ার হাওরপাড়ের দরেরপাড় গ্রামের মো. তারেক বলেন, এই হাওরে তার ১৭ কেদার জমিতে বোরো ক্ষেত ছিল। সব পানিতে তলিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জমি-খেত করতে গিয়ে (চাষবাস করতে গিয়ে) ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে দুটি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি। ঋণের টাকা কীভাবে শোধ করবো সেকথা ভেবেই টেনশনে পরান যায়।
ভাঙনের কবলে পড়া বেঁকাবাধ সংলগ্ন বাহাদুরপুরের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, হাওরে যাতে পানি না ঢোকে, সেজন্য আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। বাঁশের আড়া দিয়ে সিমেন্টের বস্তায় মাটি ভরে ফেলেছি। কিন্তু ফসলতো আর রক্ষা করা গেল না!
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সুনামগঞ্জের উপ-পরিচালক জাহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এই ৩৫ গ্রামমবাসীর মতো সুনামগঞ্জ জেলায় সরকারি হিসাবমতে ৩ লক্ষাধিক কৃষক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর ১লাখ ৩৫ হাজার হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। যদিও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমি দুই লাখ হেক্টরের ওপরে। শুধু কড়চার হাওরেই ১৮ হাজার হেক্টর।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
এনইউ/জেএম