ঢাকা, সোমবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

উত্তরের ধানকাটা শ্রমিকরা যাচ্ছেন বিভিন্ন জেলায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
উত্তরের ধানকাটা শ্রমিকরা যাচ্ছেন বিভিন্ন জেলায় উত্তরের ধানকাটা শ্রমিকরা যাচ্ছেন বিভিন্ন জেলায়-ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: ধানকাটা শ্রমিক। উত্তর জনপদের শ্রমিকদের হাতে এখন কাজ না থাকায় আগাম ধান কাটার জন্য দল বেধে তারা যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলায়।

প্রতিটি দলে ১২ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ জন সদস্য। সঙ্গে পরিধেয়, কাস্তে আর বাকুয়া (ধানকাটার পর বহনের জন্য ব্যবহৃত বিশেষ লাঠি)।

ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে কথা হয় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার গোলাপগঞ্জ থেকে আসা সুজনের (৪৫) সঙ্গে। জয়নুল (৩৬), কাছু (৪৭), সাদরারুলসহ (২৮) ২২ জনের একটি দলের নেতা তিনি।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) সকালে সুজন বাংলানিউজকে জানান, সকাল ৭টায় তারা বাড়ি থেকে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমনে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসেছেন। এজন্য জনপ্রতি ভাড়া লেগেছে ৭০ টাকা। আগাম ইরি-বোরো ধান কাটার জন্য তারা সবাই বগুড়ার শান্তাহার যাবেন, তাই ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন স্টেশনের প্লাটফর্মে।
উত্তরের ধানকাটা শ্রমিকরা যাচ্ছেন বিভিন্ন জেলায়-ছবি: বাংলানিউজসৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের সোনাখুলি গ্রামের কালা ১২ জনের একটি দল নিয়ে এসেছেন। তাদের গন্তব্য নওগাঁর আত্রাইয়ে। গেলো বছর সেখানে তারা গিয়েছিলেন। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে গৃহস্থ মোবাইল ফোনে কল করে তাদের ডেকেছেন।

এদিকে যেহেতু ধান কাটা-মাড়াই করতে ১৫/২০ দিন দেরি আছে তাই দলবেধে যাচ্ছেন তারা। পরিবার-পরিজনের খবর নেওয়ার জন্য কমদামি মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়েছেন অনেকেই।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের বণিজপাড়া থেকে ১২ জনের ধানকাটা শ্রমিকের দলনেতা খাইরুল (৪২) বলেন, প্রতিবছর এই সময় আমাদের এলাকায় কাজ না থাকায় ধান কাটার জন্য নওগাঁর রানীনগরে যাই। কয়েকদিন কাজ করলে ভালো টাকা-পয়সা রোজগার হয়। এতে দায়দেনা ও এনজিও’র ঋণের কিস্তি পরিশোধে সুবিধা হয়। যদিও পরিবার-পরিজন ছেড়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ কাজ ছাড়া কোনো উপায় নেই। উত্তরের ধানকাটা শ্রমিকরা যাচ্ছেন বিভিন্ন জেলায়-ছবি: বাংলানিউজপ্রায় প্রতিটি ট্রেনে উত্তরাঞ্চলের ধান কাটা শ্রমিকরা জয়পুরহাট, বগুড়া, পাবনার ঈশ্বরদী, নওগাঁর আত্রাইসহ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। হাতে কাস্তে, বাকুয়া আর দড়ি নিয়ে ট্রেনে ঠাসাঠাসি করে কাজের সন্ধানে ছুটছেন তারা। ট্রেনের গায়ে বাকুয়া বেঁধে চলেছেন অজানার উদ্দেশে। পেছনে পরিবার-পরিজন ফেলে দু’টি পয়সা রোজগারের জন্য আগাম জাতের ইরি-বোরো ধান কাটতে চলেছেন।

নীলফামারীর ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর, রংপুরের তারাগঞ্জ, দিনাজপুরের খানসামা, চিরিরবন্দরের শ্রমিকরা সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে আর দিনাজপুরের পার্বতীপুর, রংপুরের বদরগঞ্জ, ফুলবাড়ীর ধান কাটা শ্রমিকরা পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।