ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বিদেশে চাকরির নামে অনলাইনে ফাঁদ!  

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
বিদেশে চাকরির নামে অনলাইনে ফাঁদ!  

ঢাকা: মাত্র ৬৫ হাজার টাকায় মিলছে সিঙ্গাপুরের কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ! ওই কোম্পানির প্রকৌশলী হিসেবে নির্বাচিত প্রার্থীর বেতন প্রতিমাসে আড়াই হাজার ডলার। তবে, মাত্র ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটির ঢাকার মতিঝিল অফিস থেকে চাকরিটি কনফার্ম করতে হবে।

এমন একটি বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে চাকরি প্রার্থীদের মেইলে। ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যে টাকা পাঠাতে ব্যর্থ হলে চাকরিটি হাতছাড়া হয়ে যাবে বলেও জানানো হচ্ছে।

এতো অল্প সময়ের মধ্যে সরাসরি অফিসে এসে টাকা জমা দিতে না পারলে মানি অর্ডার বা বিকাশের মাধ্যমে টাকা জমা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা অফিস।

তবে, এমন কয়েকজন চাকরি প্রার্থীর অভিযোগ শুনে মেইলে নির্ধারিত ঠিকানায় যোগাযোগ করে উল্লেখিত অফিসের কোন হদিস পাওয়া যায়নি।

বিডি জবস নামক একটি অনলাইন জবসাইটে এপ্লাই করার পর মেইলের মাধ্যমে এমন একটি চাকরির অফার পেয়েছেন নজরুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ২৪ তারিখ সকালে আমাকে একটি মেসেজ পাঠিয়ে মেইল চেক করতে বলে। তারপর মেইলে দেখি সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানীতে প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগের জন্য আমাকে সিলেক্ট করা হয়েছে।
[email protected] এড্রেস থেকে মেইটি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ম্যানপাওয়ার কোম্পানি থেকে পাঠানো ওই মেইলে চাকরির জন্য সিঙ্গাপুর যেতে ৬৫ হাজার টাকা খরচের কথা বলা হয়। আরও বলা হয় বিকেল ৪টার মধ্যে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের বিষয়টি কনফার্ম করতে হবে।
 
বিষয়টিতে খটকা লাগলে নিচে উল্লেখিত নাম্বারে (+880 1789-298462) ফোন দেই। তারা ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে দুপুর ১২ টার মধ্যে। মেইলে বিকেল ৪টা বললেও ফোন করার পর দুপুর ১২ টা শুনে আরো সন্দেহ হয়। তখন আমি তাদের অফিসে গিয়ে টাকা দেওয়ার কথা বললে তারা আমতা আমতা শুরু করে লাইন কেটে দেয়।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উল্লেখিত (BANGLADESH  MANPOWER OFFICE ADDRESS: ARK MANSION ( 5TH FLOOR) 87-88 MOTIJHEEL C/A, DHAKA-1000) ঠিকানায় গিয়ে দেখা যায়, ৮৮ নং মতিঝিলে স্বাধীনতা ভবন ও ৮৭ নং মতিঝিলে অপর একটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।

শনিবার স্বাধীনতা ভবনের সামনে গিয়ে সিকিউরিটি কর্মকর্তাকে এটা ৮৮ নম্বর কী না? জিজ্ঞাসা করতেই তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, কি ১৫ হাজার টাকা নিয়া আসতে বলেছে?

দায়িত্বরত ওই কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এটা নিয়া খুব জ্বালায় আছি। প্রত্যেকদিন ১০-১৫ জন ওই অফিসের খুঁজে আসেন। এখানে এমন কোন অফিস নাই। এটা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের নিজস্ব অফিস।

কথা বলার ফাঁকেই একই অফার পেয়ে ওই অফিসের খোঁজে আসেন সুজন নামের এক লোক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাস করার পর শনিবার মেইলে এমন অফার পান তিনি।

তিনি বলেন, মেইলে আজকের মধ্যে টাকা দিতে বলেন। সেখানে ব্যাংক ড্রাফট, বিকাশ বা অফিসে এসে টাকা দেওয়ার কথা বলা আছে। আজ শনিবার ব্যাংক বন্ধ তারপরেও ব্যাংকড্রাফটের কথা বলাতে বিষয়টি খটকা লাগে, তাই দেখতে আসলাম বলে বেঁচে গেলাম।

পরে উল্লেখিত নাম্বারে ফোন দেয়া হলে ফোন রিসিভ না করে এই প্রতিবেদককেও বিকেল ৪টার মধ্যে টাকা পাঠাতে বলে একটি মেসেজ পাঠানো হয়।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল থানার ওসি ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, এমন কোন অভিযোগ আমরা পাইনি, পেলে ব্যবস্থা নেব। এসব প্রতারণা থেকে বাঁচতে মানুষকে আগে সচেতন হতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
পিএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।