তবে দীর্ঘদিনের কষ্ট, ক্ষোভ, বিরক্তির বোধহয় অবসানের সুযোগ এলো। সড়কটির জন্য সুসংবাদ হচ্ছে, সড়ক সংস্কারে ৩শ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে একনেকে।
সোমবার (২২ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চললে চোখ-মুখ ভরছে ধুলায়। বাহনে বসে থাকা যাত্রীদের ঝাঁকুনি তো রয়েছেই। অনেকটা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়া এ সড়কের যাত্রী-চালক ও পথচারীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তি।
বিশেষ করে খুলনার জিরোপয়েন্ট এলাকার কৈয়া বাজার, জিলেরডাঙ্গা এলাকা, গুটুদিয়া, ডুমুরিয়া বাজারের কিছুটা সামনে, মেছাঘোনা, বালিয়াখালি, টিপনা, আঙ্গারদোহা ও চুকনগর এলাকার বেশ কিছু স্থানের কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। আসন্ন ঈদ ও বর্ষা মৌসুমে চলাচলের জন্য কিছু কিছু স্থানে জোড়া-তালি দেওয়া হচ্ছে। কোথাও বসানো হচ্ছে ইটের সলিং, কোথাও দেওয়া হচ্ছে পিচ।
20170523110509.jpg)
এ সড়কের নিয়মিত বাসচালক রুবেল বলেন, আমাগের কথা কিছু লেহেন। আর পারতিছি না। গাড়িও শেষ, শরীরও শেষ।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রায়ই কাতচিৎ হয়ে পড়ে যায় গাড়ি। বিকল হয়ে পড়ে যন্ত্রপাতি। ঘটে দুর্ঘটনা।
ডুমুরিয়া এলাকার কলেজ ছাত্র তাজ বলেন, সড়কটি সংস্কার করেও লাভ হয় না। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল করায় সংস্কার দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এবার যদি ভালো করে রাস্তাটি তৈরি করা হয়, তাহলে হয়তো ভারী যানবাহনে ক্ষতি হবে না।
জানা যায়, সাতক্ষীরার স্থলবন্দর ভোমরা থেকে মামামাল নিয়ে যানবাহনগুলো খুলনা, বাগেরহাট, মংলা, ফকিরহাট, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ যায়। অন্যদিকে মাওয়া হয়ে ঢাকা, ফেনী, সিলেট, জামালপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে খুলনা-সাতক্ষীরা-মুন্সীগঞ্জ মহাসড়ক দিয়ে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পরিবহন, লোকাল বাসসহ ছোট-বড় প্রচুর সংখ্যক যানবাহন চলাচল করছে।
সাতক্ষীরায় সুন্দরবনের কিছু অংশ রয়েছে। যে অংশ দেখতে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসেন। তাদের এ সড়কের কারণে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অপার সম্ভাবনার সুন্দরবনেও পর্যটক না বাড়ার অন্যতম কারণ এ সড়ক। সংস্কার হলে সুন্দরবনে পর্যটক বাড়বে বলেই আশা তাদের।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ১১ এপ্রিল খুলনাংশের (খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে চুকনগর ১৮ মাইল এলাকা পর্যন্ত ২৮.৩০ কিলোমিটার) জন্য ১৬২ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। এখন দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগ হলে বর্ষা মৌসুমের পর কাজ শুরু করা হবে। চুকনগর ১৮ মাইল এলাকা থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত আরও ২৬ কিলোমিটার সড়কের জন্য ১৩৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। দুই অংশের কাজই একসঙ্গে শুরু হবে। খুলনা থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত মোট ৩শ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এ রাস্তার যাত্রীদের দুর্ভোগের দিন শেষ হবে।
বর্তমানে যে কাজ হচ্ছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আপদকালীন কাজ। আসন্ন ঈদ আর বর্ষা মৌসুমে যাতে চলাচলে রাস্তাটি কিছুটা উপযোগী থাকে তার জন্য এ কাজ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
এমআরএম/এএ