ঢাকা, সোমবার, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৩ মার্চ ২০২৫, ০২ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

নিজেদের শত্রু যখন নিজেরাই!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
নিজেদের শত্রু যখন নিজেরাই! ধর্মঘটে পণ্যবাহী ট্রাক ঠেকাচ্ছে শ্রমিকরা। ছবি: বাংলানিউজ

মহাসড়ক ঘুরে:  প্রায় ৫২ ঘণ্টাব্যাপি উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় চলা ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ ভ্যান কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে। প্রশাসন সাত দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর মঙ্গলবার (২৩ মে) বেলা সোয়া ১১টায় সংগঠনের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান আকন্দ কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন।

বেলা ১১টা থেকে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর আগ পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা মহাসড়কের একাধিক পয়েন্টে অবস্থা নিয়ে চালিয়ে যান কর্মসূচি।

  

সে অনুযায়ি ঢাকা-বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে জটলা বেঁধে কর্মসূচির পক্ষে অবস্থান নেন অসংখ্য যুবক শ্রমিক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের তৎপরতা বাড়তে থাকে। ফলে এসব স্থানে এসে শ্রমিকদের বাধার মুখে আটকা পড়ে যায় বিভিন্ন রুটগামী বিপুল সংখ্যক যানবাহন।
 
মঙ্গলবার (২৩ মে) ভোর থেকে কর্মবিরতি স্থগিতের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মহাসড়কের বগুড়া শহরের চারমাথা কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল, মাটিডালী, মহাস্থান, তিনমাথা, বনানী লিচুতলা, শেরপুরের সীমাবাড়ী, ছোনকা, ধুনটমোড় এলাকায় এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
 
শোঁ শোঁ শব্দ তুলে ছুটছিল বিভিন্ন পণ্যবাহী যান। মহাসড়কে লোকজনের ভিড়ভাট্টা চোখে পড়া মাত্র অনেকটা নিজের অজান্তেই ব্রেকে চাপ পড়ছিল চালকের। ওমনি হুড়মুড় করে মহাসড়কের মাঝে বা পাশে নিয়ে থামাচ্ছিলেন চলন্ত যান। স্টিয়ারিংয়ের ওপর মাথা রেখে সুবোধ বালকের মত সিটে চুপচাপ বসে থাকছিলেন চালক।
 
সুযোগ পাওয়া মাত্র সামনে ও পেছনের অবস্থা বুঝতে সামনের গ্লাস, জানালা ও লুকিং গ্লাসে উঁকিঝুঁকি মারতে থাকেন চালক। অবস্থা অনুকূল মনে হলেই চাবি মেরেই গাড়ি সামনের দিকে টান মারছিলেন। গন্তব্যের উদ্দেশ্যে প্রাণপনে ছুটছিলেন।
 
কিন্তু বিধি বাম! ঢাকা-বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের একাধিক পয়েন্টে জটলা বেঁধে কর্মসূচির পক্ষে অবস্থান নেওয়া শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ছিলেন গাড়ি চালকরা।
 
জাহিদুল, আজম, ইসমাইল, হাবিব, শামীমসহ একাধিক আন্দোলনকারী শ্রমিক বাংলানিউজকে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সাত দফা বাস্তবায়নে সংসার জীবন ফেলে রাস্তায় নেমেছিলাম আমরা। অন্য পেশা জানি না। আমরা কেউ গাড়ি চালাই। আবার কেউবা হেলপারি করি। সেই টাকায় চলে আমাদের অভাবী সংসার।

অথচ আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করি। আর আমাদের মতই অন্য ভাইয়েরা গাড়ি চালান। এতে করে দেখলাম, নিজেদের শত্রু আমরা নিজেরাই। যাই হোক কিছুটা হলেও আন্দোলনের সফলতা এসেছে বলে যোগ করেন এসব শ্রমিক।
 
প্রসঙ্গত, ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ ভ্যানের কাগজপত্র ও ড্রাইভিং চেকিংয়ের নামে সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের পুলিশি হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। বাম্পার, সাইড অ্যাঙ্গেল ও হুক খোলার সরকারি আদেশ প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

২০১৭ সালে মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া নতুন খসড়‍া আইন প্রত্যাহার করতে হবে। বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ব্রিজ স্কেলের নামে চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে। সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে বন্ধ করতে হবে হয়রানি। নতুন ড্রাইভিং ও হেভি লাইসেন্স সহজশর্তে দিতে হবে। এসব দাবি বাস্তবায়নে এ কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
এমবিএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।