ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাইলটের বাবার জানাজা বাদ এশা, দাফন টিকাপাড়া গোরস্থানে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৭
পাইলটের বাবার জানাজা বাদ এশা, দাফন টিকাপাড়া গোরস্থানে

রাজশাহী: জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বাবা শামসুল আলম মোল্লার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে রোববার (২৭ আগস্ট) বাদ এশা। মহানগরীর আলুপট্টি বঙ্গবন্ধু চত্বরে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। 

নামাজ শেষে মহানগর ঈদগাহ (টিকাপাড়) গোরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।  

জানতে চাইলে রোববার বিকেলে ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে খালেদ মাসুদ পাইলট দুপুরেই ঢাকা থেকে রাজশাহী এসে পৌঁছান।  

এদিকে পাইলটের বাবা সাবেক ফুটবলার শামসুল আলম মোল্লার মৃত্যুতে রাজশাহীতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাফিউস সামস প্যাডি, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ সাধারণ সম্পাদক মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, যুগ্ন-সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

পারিবারিক সূত্র জানা গেছে, নিহত রাজশাহীর সাবেক ফুটবলার শামসুল আলম মোল্লার তিন সন্তান রয়েছেন। এর মধ্যে খালেদ মাসুদ পাইলট সবার ছোট। অপর দুই সন্তান হলেন- শিমু ও শিমুল। শামসুল আলম মোল্লার স্ত্রীর নাম নারগিস আরা বেগম।

ব্যক্তি জীবনে শামসুল আলম মোল্লা ভালো ফুটবলার ছিলেন। ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি ঢাকা লিগে মোহামেডান ও আবাহনীর হয়ে খেলতেন। সেই সময় তার তারকা খ্যাতি ছিল। রাজশাহীসহ গোটা দেশের মানুষ তাকে 'ফুটবলার শামসু' নামেই চিনতেন।

নিহত শামসুল আলম মোল্লার ছোট ভাই রফিকুল আলম খোকন জানান, তখনকার পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তানের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া দ্বিতীয় খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। পাকিস্তান যুবদলের হয়ে ১৯৬৫ সালে রাশিয়া মাতাতেও যান।  

শামসুল আলম মোল্লা স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আবাহনী ফুটবল দলে যোগ দিয়েছিলেন।  

তিনি ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে সফল মিডফিল্ডার হিসেবে আবাহনীকে মূল্যবান জয় এনে দিয়ে সবার নজর কাড়েন। ক্রীড়াঙ্গনে ফুটবলকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তোলেন তিনি। শামসুল আলম তার অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যে সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ রাখতেন। দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলী দেখিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের দীর্ঘসময় দর্শকদের মাঠে ধরে রেখেছিলেন।  

রফিকুল আলম খোকনের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ফুটবলার শামসুল পরিবারের অবদান রয়েছে। তার ছেলে পাইলটসহ পাঁচ ভাই পেশাদার খেলোয়াড় ছিলেন। বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে ঢাকা স্টেডিয়ামের মাঠে ঝড় তুলেছিলেন রাজশাহীর মিডফিল্ডার ‘শামসু’। এছাড়া শামসুল আলম মোল্লা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টরও ছিলেন।

এর আগে রোববার দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যান শামসুল আলম মোল্লা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। গোসল করতে নেমে তিনি ডুবে যান। পরে দুপুর দুইটার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।  

রাজশাহী মহানগরীর সাগরপাড়া এলাকায় থাকা খালেদ মাসুদের বাড়ির পাশেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।  

রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বেলা ১১টার দিকে খালেদ মাসুদের বাবা শামসুল আলম মোল্লাহ বাড়ির পাশে ডাক্তার কাইয়ুমের পুকুরে গোসল করতে নামেন। এক পর্যায়ে তিনি পানিতে ডুবে যান। পরে বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে তিনি পানিতে ডুবে যান।  

শেষে খবর পেয়ে রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের ডুবরিরা গিয়ে পুকুরের পানিতে তল্লাশি শুরু করে। দুপুর দুইটার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৭
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।