রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সোমবার (২৮ আগস্ট) দেওয়া হবে ৬ সেপ্টেম্বরের ফিরতি টিকিট। এজন্য ভোর থেকে দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে চাহিদা থাকায় দুপুরের মধ্যে টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আসা সাগরপাড়া এলাকার আমান উল্লাহ জানান, তার ছেলে ও ছেলের বউ এবং নাতি ঈদ করতে ঢাকা থেকে আসছে মঙ্গলবার। তাদেরকে ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফিরতে হবে। সেজন্য ফিরতি টিকিট কাটতে এসেছেন স্টেশনে। তবে ভোর ৫টায় এসেও তার সিরিয়াল নম্বর হচ্ছ ১০৩। এর পরও টিকিট নিয়েই ফিরবেন বলে জানান আমান উল্লাহ।
ফরিদা ইয়াসমিন নামের আরেক টিকিট প্রত্যাশী বলেন, তার ভাই-ভাবি দুজনেই চাকরি করেন ঢাকায়। ঈদ করতে বাড়ি আসছেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে আবার ঢাকা ফিরত না পারলে সমস্যা হবে তাই ফিরতি পথের জন্য আগাম টিকিট কাটতে এসেছেন। নারীদের লাইনে ভিড় কম। তাই বিক্রি শুরু হলে দ্রুতই টকিট পেয়ে যাবেন বলে জানান এই তরুণী।
এদিকে, রাজশাহী স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে ৭টি কাউন্টারের মধ্যে আজ ৬টি কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ফিরতি টিকেট বিক্রির কার্যক্রম।
এছাড়া পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সৈয়দপুর ও লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন থেকেও ফিরতি যাত্রার জন্য আজ সকাল থেকে একযোগে অগাম টিকিট বিক্রি করা হবে। গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) থেকে ফিরতি পথের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) আগাম টিকিট বিক্রি শেষ হবে।
জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিন্টেডেন্ট জিয়াউল আহসান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ উল আজহা উপলক্ষে প্রথমদিন শুক্রবার (২৫ আগস্ট) পাওয়া গেছে আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের টিকিট। এভাবে ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ আগস্ট যথাক্রমে পাওয়া যাচ্ছে ৪, ৫, ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বরের অগাম টিকিট।
এছাড়া তার পর থেকে পর্যাক্রমে আগের নিয়েমেই মিলবে ১০ দিন আগের টিকিট।
তিনি জানান, টিকেট বিক্রিতে শৃঙ্খলা রাখতে রেল স্টেশনে র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। টিকিট কালোবাজারি কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যাত্রী হয়রানি এড়াতেও কাজ করবে তারা। আর রেল পুলিশ ও আনসার সদস্যরাও কাজ করছে।
জিয়াউল আহসান বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে। এজন্য পশ্চিম রেলওয়ে দুই জোড়া ট্রেন বরাদ্দ পেয়েছে। সাদা রেকের ইন্দোনেশিয়ান কোচগুলো ‘ঈদ স্পেশাল’ নামে পশ্চিমের যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাবে। ২ সেপ্টেম্বর ঈদ ধরে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
ঈদের পর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরও সাত দিন রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী এবং ঢাকা-পার্বতীপুর-ঢাকা চলাচল করবে । ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ফিরতি ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি চলবে। একজন যাত্রী চারটি করে আগাম টিকিট কাটতে পারছেন।
ঈদ যাত্রীদের ভ্রমণের জন্য অগ্রিম টিকিট রাজশাহী স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিক্রি করা হবে। এছাড়া ঈদুল আজহার পাঁচ দিন আগ থেকে ঈদের পূর্বদিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর সাপ্তাহিক বন্ধের দিনেও চলাচল করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সহকারী চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (এসিসিএম) হাসিনা খাতুন বাংলানিউজকে জানান, ঈদ স্পেশাল-৩ ট্রেনটি কমলাপুর থেকে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। পৌঁছাবে রাত সাড়ে ৩টায়। আর ঈদ স্পেশাল-৪ ট্রেন প্রতিদিন দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রাজশাহী ছাড়বে। কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে রাত ৮টা ২০ মিনিটে।
এছাড়া ঈদ স্পেশাল-১ ট্রেনটি প্রতিদিন বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশন থেকে পার্বতীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পৌঁছাবে রাত আড়াইটায়। আর ঈদ স্পেশাল-২ ট্রেনটি সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।
পৌঁছাবে বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে। এই ট্রেনগুলো খুব কম স্টেশনে থামবে । আর লাল-সবুজ রেকের ঢাকা-রাজশাহী রুটের আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি, পদ্মা ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন আগের নিয়মেই চলাচলা করবে। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সব প্রস্ততি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে বলেও জানান পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের এই বাণিজ্যিক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
এসএস/এসএইচ
