ড. জাফর ইকবালের এ নির্দেশনার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক। রোববার (৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সাংবাদিকদের ব্রিফিং করছিলেন তিনি।
শনিবার (৩ মার্চ) বিকেলে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে ফয়জুর রহমান নামে এক যুবকের ছুরিকাঘাতে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল। ড. ইয়াসমিনও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ড. জাফর ইকবালকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে সিএমএইচে নিয়ে আসা হয় রাতেই।
এখানে ব্রিফিংকালে ড. ইয়াসমিন বলেন, ড. জাফর ইকবাল আহত হওয়ায় পরই আমাকে ফোন দিয়েছেন। বলেছেন, তোমরা তো টিভিতে জানবা, তাই আমিই ফোন দিলাম। তুমি ওদের (ছাত্রদের) বলো যেন ছেলেটাকে (ছুরিকাঘাতকারী) মেরে না ফেলে। আর ছাত্রদের বলো যেন উচ্ছৃঙ্খলতা না করে। আমি ভালো আছি। যেন রেগে গিয়ে ছাত্ররা কিছু না করে।
সিএমএইচে ড. জাফর ইকবালের চিকিৎসার বিষয়ে ইয়াসমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের চিকিৎসকরাই তার সেবায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বিধায় তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। এখানে ভাল আছেন। আশা করি শিগগির তিনি ক্লাসে ফিরে যেতে পারবেন। তার পাঁচটা কোর্স এখনো শেষ করার আছে।
প্রধানমন্ত্রী নিজে ড. জাফর ইকবালের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। সবার সহযোগিতা পেয়েছি। এখানে কাউকে দেখতে না আসার জন্য অনুরোধ করছি।
ড. ইয়াসমিন সবার কাছে জাফর ইকবালের দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, সবার উদ্দেশে বলতে চাই, জাফর ইকবাল মানসিকভাবে খুবই ভালো আছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসন বা সরকার কাউকে দোষারোপ করার সুযোগ নেই বলেও জানান ড. ইয়াসমিন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালনকালে ঘটনার সময় একজন অফিসারও আহত হয়েছেন। এখানে আমি পুলিশ বা সরকার কাউকে ব্লেম দিচ্ছি না। দেওয়ার সুযোগ নেই।
ব্রিফিংকালে ড. ইয়াসমিনের সঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফরিদ উদ্দীন আহমেদ এবং ড. জাফর ইকবালের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার ওই ঘটনার পরই ফয়জুর রহমান নামে হামলাকারী যুবকটিকে আটক করে ফেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাকে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে পরে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর জ্ঞান ফেরে ওই হামলাকারীর। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন র্যাবের কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ‘জাফর ইকবাল নাস্তিক, ইসলামের শত্রু’, তাই তার ওপর হামলা করেছে সে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৮
ইইউডি/এইচএ/
** ড. জাফর ইকবাল ভালো আছেন: ইয়াসমিন হক