ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বৈশাখী সম্ভারে দোয়েল চত্বরের মৃৎশিল্পের দোকান

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৮
বৈশাখী সম্ভারে দোয়েল চত্বরের মৃৎশিল্পের দোকান দোয়েল চত্বরের মৃৎশিল্পের দোকানগুলোতে মাটির তৈজসপত্র বেশি হলেও বাঙালি ঐতিহ্যের অন্যান্য পণ্যের রয়েছে বিপুল সমাহার

ঢাকা: একদিন বাদেই বাঙালি সংস্কৃতির সার্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষ। নতুন বছরের প্রথম দিন ঢাকার রমনা পার্ক, বাংলা একাডেমি কেন্দ্রিক লোক সমাগম হয় বেশি। বর্ষবরণের দিনটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বরের পাশের মৃৎশিল্পের দোকানগুলোতে বেচা-বিক্রি বেড়ে যায়। ক্রেতাদের হাতে পছন্দের পণ্য তুলে দিতে ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় তাদের।

দোয়েল চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার মৃৎশিল্পের দোকানগুলোতে মাটির তৈজসপত্র বেশি হলেও বাঙালি ঐতিহ্যের অন্যান্য পণ্যের রয়েছে বিপুল সমাহার।  

এখানে পাওয়া যায়, মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র, গহনা, হাঁড়ি-পাতিল, কলস, ফুলদানি, বাহারি খেলনা, মাটির কাপ-পিরিচ, থালা, বাটি, মাটির তৈরি ফলমূল, বৈশাখী চুরি, বাঁশের কুলা, ডালা, বেত ও কাঠের শোপিস, পাটের শিকা, পুতুল, হ্যান্ডপার্স, সাইডব্যাগ, হোগলা পাতা ও নারিকেলের খোসার তৈরি নানা ধরনের শোপিস।

আরও আছে নকশী করা তালপাতার পাখা, পাখি, নৌকা, একতারা, ডুগডুগি, ঢোল, মাথার মাথাল, সাপের বীণ, কুড়েঘর ও ডোরবেলসহ হাজারও বৈশাখী পণ্য।

দোয়েল চত্বরের মৃৎশিল্পের দোকানগুলোতে মাটির তৈজসপত্র বেশি হলেও বাঙালি ঐতিহ্যের অন্যান্য পণ্যের রয়েছে বিপুল সমাহার

দোকানিরা জানান, এখানে প্রায় ৪০টি মৃৎশিল্পের দোকানসহ মোট ৫০টি দোকান আছে। সব দোকানের চিত্র একই।

দোয়েল চত্বরে মৃৎশিল্পের একটি দোকানের মালিক মনির বাংলানিউজকে বলেন, একদিন বাদে পহেলা বৈশাখ হলেও তাদের বিক্রি আরও ১৫ দিন আগে থেকেই বেড়েছে। দোয়েল চত্ত্বরের এই দোকানগুলোর কথা সবাই জানে। কোনো বিজ্ঞাপন দিতে হয় না। যাদের বৈশাখী পণ্য খুচরা কিংবা পাইকারী কেনার দরকার হ, তারা এখানে চলে আসেন। তাই অন্যদের তুলনায় তাদের বিক্রিও বেশি। পহেলা বৈশাখে ক্রেতাদের হাতে পণ্য তুলে দিতে দিনরাত কাজ করে চলছেন বলে জানান তিনি।

মনির আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মাটির তৈরি তৈজসপত্র ও গহনা তৈরি হলেও তারা বরিশাল ও নারায়ণগঞ্জ থেকেই এসব সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া কুটির শিল্পের অন্যান্য মালামাল দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়। এখানে ২০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায়।  

ওই এলাকার মৃৎশিল্পী শুক্কুর আলী বাংলানিউজকে জানান, এখানে তিনি ৪১ বছর যাবত তিনি ব্যবসা করছেন। কম-বেশি বিক্রির হিসাব তিনি এখনও করেননি। ক্রেতাদের যা চাহিদা পূরণ করতে পারাতেই তার তৃপ্তি। তবে এপ্রিলের শুরুতে তেমন বিক্রি না থাকলেও দিন দশেক থেকে বিক্রি ভালো।

দোয়েল চত্বরের মুরালি ব্যবসায়ী হারুন বাংলানিউজকে বলেন, বৈশাখে মুরালির বিক্রি বেশ ভালো হয়। মিষ্টির দোকান থেকে ফুটপাত সবখানেই মুরালির বিক্রি ভালো। অন্য সময়ের চেয়ে তাই আয়োজনও থাকে বেশি।  

বৈশাখ উপলক্ষে এবার তিনি গুড়ের বাতাসা, খই মুড়কি, নারিকেলের নাড়ু, ঝাল নিমকি, মিষ্টি নিমকি, বেসনের নিমকি, ঝিনুক, নকুল, কদমা গজাসহ নানার পণ্য নিয়ে প্রস্তুত আছেন। রমনায় মানুষ সমাগম বেশি হওয়ার পাশাপাশি তার বিক্রিও ভালো হবে বলে আশাবাদী হারুন।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৮
এমআই/এমআইএইচ/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।