রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজার সিগনালে ‘মাসব্যাপী ট্রাফিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত দুই মাসব্যাপী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে আমরা কাঙ্খিত পর্যায়ে যেতে পারিনি।
শত বছরের অভ্যাস দুই-এক মাসেই পরিবর্তন হয়ে যাবে, আমরা সেটা প্রত্যাশাও করি না। তবে সব প্রক্রিয়ায় ২০১৮ সালের মধ্যেই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে।
তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেই। ঈদের আগে ১০ দিনব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ এবং ঈদের পর সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে ট্রাফিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আমাদের কার্যক্রমে স্কাউট, গার্লসগাইড, বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়তা করছে। এছাড়া, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ), সিটি করপোরেশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করছি।
গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে কতটা অগ্রগতি হয়েছে সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের আন্তরিকতা বা প্রচেষ্টার ঘাটতি ছিলো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কমিশনার বলেন, নির্ধারিত বাস স্টপেজে আমরা স্টপেজ শুরু থেকে শেষ সাইবোর্ড টানিয়েছি। মোটরসাইকেলে দুই আরোহীর হেলমেট নিশ্চিত করা কিংবা দুইজনের অধিক আরোহী বহন না করার বিষয়ে অনেকটাই সফল হয়েছি। পথচারীদের ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারেও সফলতা এসেছে, কিন্তু কাঙ্খিত মাত্রায় নয়।
দুই মাসব্যাপী অভিযানে ডিএমপি প্রায় ৭ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ সময়ে আমরা পর্যাপ্ত গাড়ি ডাম্পিং ও রেকারিং করেছি।
আমাদের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতাই সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পথচারীদের জোর করে ফুটওভারব্রিজে উঠতে বাধ্য করতে হয়। ইতোমধ্যে আমরা চালকদের সঙ্গেও বহু মিটিং করেছি। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ব্যাপক নয়। আমরা প্রত্যাশা করবো, সমাজের সব দায়িত্বশীলরা আইন মানবেন। সবাই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করুন, নিজে আইন মানুন ও অন্যকে আইন মানতে উদ্ভুদ্ধ করুন।
আমরা বিদেশে গেলে কিংবা ঢাকার বিশেষ কোনো এলাকায় গেলে আইন মানি। কিন্তু সব স্থানে কেন আইন মানি না এমন প্রশ্ন রেখে কমিশনার বলেন, শুধু পুলিশ নয়, সরকারের কোনো বাহিনী দিয়ে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়, যতোক্ষন না আমাদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা তৈরি হবে।
জাহাঙ্গির গেট থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত আমরা স্বয়ংক্রিয় বাতির আওতায় আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনো কারণে বাতিগুলো চালু করা সম্ভব হয়নি। কারণ বাতিগুলো সরকারের অন্য সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে আমরা সব সংস্থার সঙ্গেই সমন্বয় করছি।
ফুটপাত দখলমুক্ত করতে তাদের কর্মসংস্থানের বিষয় রয়েছে, লেগুনা কোনো পথে চলবে বা কোরো পথে চলবে না আমরা সেসব ভাবছি। সাফল্যের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি, কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুশৃঙ্খল নগরী গড়ে তোলার প্রত্যাশা করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় রাস্তাঘাটে যে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এটা একটা প্রক্রিয়া। তবে বড় বিষয় অবকাঠামোগত পরিবর্তন করা। সরকারের পক্ষ থেকে এজন্য স্বল্প-মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের চাঁদা আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে যদি কোনো ব্যক্তি অনিয়ম করে তাহলে সেই দায় একান্তই তার। কোনো ব্যক্তির দায় তার প্রতিষ্ঠান নেবে না, যদি কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮
পিএম/ওএইচ/