বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও থেকে থেকে আগুনের লেলিহান শিখা যখন জ্বলছিল, তখন অগ্নিকাণ্ডস্থলের আকাশে বিমান বাহিনীর দু’টি হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়।
রাতে সেখানে উপস্থিত বিমান বাহিনীর প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ) স্কোয়াড্রন লিডার সঞ্জিব চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, পানি স্বল্পতার খবর পেয়ে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে চার গাড়ি পানি নিয়ে আসা হয়েছে।
পড়ুন>> চকবাজারের ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিলো ৬৩ প্রাণ
রিজার্ভ পানি যতটুকু প্রয়োজন হয় তা সরবরাহের জন্য বিমান বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সকালে ঘটনাস্থলে উপর থেকে হেলিকপ্টারে করে পানি ছিঁটাতে দেখা যায়। এ সময় ভবনগুলোর ছাদে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় তা নেভাতে তৎপরতা শুরু করে বিমান বাহিনীর দু’টি হেলিকপ্টার।
এর আগে রাত সাড়ে ১০টার কিছু পরে পুরান ঢাকার চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।
এলাকাবাসী বলছেন, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে। কারও কারও মতে, বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়ায়। ওয়াহিদ ম্যানসনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন।
এ আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম। একটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন।
সাড়ে ৩টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহম্মেদ খান বলেন, এখানে আসার রাস্তাটির দু’পাশই সরু। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সহজে ঢুকতে পারেনি। তবে শেষ পর্যন্ত কয়েকঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ভবনে দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ৫২ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডস্থলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সাঁটানো এক বোর্ডে সকাল পর্যন্ত ৬৩ মরদেহ উদ্ধারের তথ্য দেওয়া হয়। সেখানে আরও বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ বা আহত হয়ে ৪১ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯/আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা
এজেডএস/পিএম/ডিএসএস/এমএমআই/এইচএ/এমএ