ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ূ, টেকসই পরিবেশ সম্ভব না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৯
সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ূ, টেকসই পরিবেশ সম্ভব না গোলটেবিল বৈঠকে সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সবার সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ূ, টেকসই পরিবেশ কখনই সম্ভব না বলে জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেছেন, শহর থেকে শুধু আনফিট গাড়ি কমালেই এর সমাধান আসবে না বরং রাস্তা সংস্কার ও বিল্ডিং উন্নয়নের ক্ষেত্রেও দরকার সমন্বিত উদ্যোগ। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত, মেধাবী জাতি গঠনে সবার সচেতনতা জরুরি।

সোমবার (১১ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নির্মল বায়ূ ও টেকসই পরিবেশ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তারা।  গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন সমকাল উপ-সম্পাদক অজয় দাশ গুপ্ত।

বৈঠকে পরিবেশ ও বন এবং জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী বলেন, পরিবেশ দূষণে সবার আগে নিজেকে সচেতন হতে হবে অন্যকে সচেতন করতে হবে। আমরা ইটভাটা নিয়ে যখন অভিযান করেছি তখন প্রায় ৭০০টি রিট জমা পড়েছে। এখন আমরা আইন কিছুটা সংশোধন করেছি, ইটভাটার দূষণ অনেক কমেছে।

তিনি বলেন, আমরা দূষণরোধে ১১টি মনিটরিং সেল করেছি আরও পাঁচটির কাজ চলমান আছে। কোথায় কতোটুকু দূষণ হচ্ছে মনিটরিং সেলের মাধ্যমে জানা যাবে এবং শাস্তি দেওয়া যাবে। আবার কোনো কোনো জায়গাতে ইনডোর দূষণ খুব বেশি এতে নারী ও শিশু এর শিকার হন। আমাদের উন্নয়নমূলক কাজেও সমন্বয় দরকার। সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া একা কারো পক্ষেই দূষণ রোধ সম্ভব না।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বায়ূ দূষণের কারণে সল্পন্নত দেশের ৫০ শতাংশ নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী বায়ূ দূষণ। এ কারণে শিশুর জন্মগত হৃদরোগ সৃষ্টি হয়। আবার বায়ূ দূষণের কারণে শিশু, এলার্জি, হাপানি, ক্যান্সার হওয়ায় সম্ভাবনা খুব বেশি।

তিনি বলেন, এক সময় রাজধানীতে বেবিট্যাক্সির কারণে চলা চলে সমস্যা হতো। সেই সময় বাতাসে সিসার পরিমাণ ছিলো অত্যান্ত বেশি। বেবিট্যাক্সি বন্ধ করার পর এর মাত্রা কিছুটা কমেছে। এখন যানবাহন ও জ্বালানি নিয়ে ভাবতে হবে, গাড়ির মান দেখতে হবে।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, বায়ূ দূষণ রোধে সরকার চেষ্টা করছে। এখন প্রতিনিয়ত ইটভাটায় অভিযান চলছে, একাধিক সনাতনভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া রাস্তা, বিল্ডিং উন্নয়নের কাজে সমন্বয়ের অভাবে বায়ূ দূষণ হচ্ছে। সরকার এ নিয়ে কাজ করছে আমাদেরও সচেতন হতে হবে।

ড. মিহির কান্তি মজুমদার বলেন, পরিবেশের সঙ্গে স্বাধীনতা জড়িত। দেশ স্বাধীন হওয়ার কারণে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। আমরা ফুলবাড়িয়া থেকে বাস টার্মিনাল মহাখালিতে নিয়েছি, তেজগাঁও থেকে বিমানবন্দর সরিয়েছি, আবাসিক এলাকা থেকে কারখানাও সরিয়েছি। তবে সবার সমন্বয় থাকলে নির্মল বায়ূ পেতাম। একই রাস্তা এক সময় মন্ত্রণালয় খুড়ছে, কয়দিন পর সিটি করপোরেশন খুড়ছে এর কিছু দিন পর ওয়াসা। এভাবে এলোমেলোভাবে খোড়াখুড়ির কারণে বায়ূ দূষণ বেড়েই চলছে। বায়ূ দূষণ কমাতে সবার সমন্বিত উদ্যোগ দরকার, না হলে বায়ূ দূষণ কমানো সম্ভব না।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন বন ও পরিবেশ এবং জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এস এম মঞ্জুরুল হান্নান খান, অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম, ডা. সাকিরা নোভা,  শিশু সাহিত্যিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তি আলী ইমাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৯
ইএআর/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।