২ মার্চ থেকে ১৫ই মার্চ পর্যন্ত মোট ১৪ দিনে ১০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জে। এর মধ্যে আঞ্চলিক সড়কে পৃথক দু'টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে দুই কলেজছাত্রের।
২ মার্চ (শনিবার) দুপুরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার খেরুপাড়া এলাকার আঞ্চলিক সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয় তিতুমীর কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফরিদ হোসেন (২২)। ফরিদ জেলার শিবালয় উপজেলার জগদিয়া গ্রামের কুপাত আলীর ছেলে। একই দুর্ঘটনায় আহত হয় মোটরসাইকেল আরোহী তার চাচাতো ভাই আকাশ হোসেন।
৫ মার্চ (মঙ্গলবার) দিনগত রাতে শিবালয় উপজেলার টেপড়া এলাকায় কাভার্ডভ্যান চাপায় নিহত হন বেদেনা বেগম (৪৮) নামে এক নারী। তিনি শিবালয় সদর এলাকার মো. সাঈদ আলীর স্ত্রী বেদেনা বেগম। এর পরের দিন ভোরে একই উপজেলার মেঘাফিড ফ্যাক্টরির সামনে প্রাইভেটকার চাপায় নিহত ওই ফ্যাক্টারির শ্রমিক বাইসাইকেল আরোহী সজিবর রহমান (৭০)। শিবালয়ের ষাটঘর তেওতা এলাকার বাসিন্দা তিনি।
একই দিন সন্ধ্যায় শিবালয় উপজেলার মুশুরিয়া এলাকায় বাসের ধাক্কায় নিহত হন পিকআপের দুই যাত্রী। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন তারা। দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন ওই উপজেলার কেশবপট্টি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুল লতিফ (৪০) এবং পার্শ্ববর্তী বাকলা গ্রামের ফেলু শেখের ছেলে মুন্নাফ শেখ (৪২)। একই দুর্ঘটনায় আহত হয় আরও ৩/৪ জন।
৮ মার্চ (শুক্রবার) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গোশাইনগর নামক এলাকার আঞ্চলিক সড়কে ট্রাকচাপায় নিহত হয় রাকিব হোসেন (২০) নামে এক কলেজছাত্র। রাকিব সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের হাসলি গ্রামের কুদ্দুস আলীর ছেলে এবং সরকারি দেবেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
১৩ মার্চ (বুধবার)মধ্যরাতে ঘিওর উপজেলার ধুলন্ডী এলাকায় খুলনাগামী গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে বাসের সহযোগী হারুন মিয় (৪০) নিহত হয়। একই দুর্ঘটনায় আহত হয় কমপক্ষে ২০ বাসযাত্রী। এরপর দিন সকাল ৭টার দিকে মহাসড়কের সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গী এলাকায় মালবোঝাই ট্রাক ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়। নিহত তিনজন হলেন- পিকআপভ্যানচালক চাঁন মিয়া (২৫), পিকআপভ্যানের হেলপার হাবিবুর রহমান (২৫) ও পিকআপভ্যানে থাকা মুরগি ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান।
এসব দুর্ঘটনার বিষয়ে বরংগাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়ামিন-উদ-দৌলা বাংলানিউজকে জানান, সাময়িক সময়ে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার বেশির ভাগই রাত এবং ভোর বেলায় ঘটেছে। এসময় মহাসড়ক ফাঁকা থাকায় পাল্লাপাল্লি করে বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানোর চেষ্টা করে চালকেরা। যে কারণে ওই দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মধ্যরাতের পর থেকে ভোর পর্যন্ত মহাসড়কে ওই কয়েকদিন বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন ছিলো। এসময় খুব সতর্কতার সঙ্গে যানবাহন চালানো উচিত। কিন্তু তা না করে পাল্লাপাল্লি করে যানবাহন চালানোর জন্যই এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে হলে যানবাহন চালক ও যানবাহনের মালিকদেরকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৯
কেএসএইচ/এএটি