সেতুর মোট ৪২টি পিলারের মধ্যে ১৩টিতে বসে গেছে ১০টি স্প্যান। স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত আরও ১০টি পিলার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পিলার স্থাপনের জন্য নদীতে যে ২৬২টি পাইল বসবে তারমধ্যে ২১৮টির ড্রাইভ হয়ে গেছে, বাকি ৪৪টি পাইলের কাজ চলমান রয়েছে। সব মিলিয়ে মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ।
পদ্মাসেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বাংলানিউজকে বলেন, সেতুর ২৩টি পিলার (স্প্যানধারী ১৩টি পিলারসহ) প্রস্তুত আছে। বাকি ১৯টি পিলারের কাজও চলমান। চলতি মাসেই জাজিরা প্রান্তে আরও একটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রস্তুত ২৩টি পিলার হলো- ২, ৩, ৪, ৫, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ২০, ২১, ২৩, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২ নং। স্ক্রিন গ্রাউটিং পদ্ধতিতে সাতটি করে পাইল হবে ১১টি পিলারে। এগুলো হলো-৬, ৭, ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ নং পিলারগুলো। সেতুর প্রকৌশল সূত্র জানায়, ১নং পিলারের পাইল ক্যাপ হয়ে পিয়ারের এক লিফট শেষ হয়েছে। ৬ ও ৭নং পিলারের পাইল ড্রাইভ সম্পন্ন হয়েছে। ১, ৬, ৭নং পিলার প্রস্তুত হতে তিন মাস সময় লাগবে। ৮নং পিলারের সাতটি পাইলের মধ্যে দুইটি পাইল ড্রাইভ সম্পন্ন হয়েছে। ৯নং পিলারের পাইল ক্যাপের কাজ চলছে। ১০নং পিলারের পাইল ড্রাইভের কাজ চলছে। ১১নং পিলারের কাজ শুরু হয়নি। ১২নং পিলারের পাইল ড্রাইভিংয়ের কাজ চলছে। ২৪নং পিলারের পাইল ক্যাপ শেষ। ২৫নং পিলারের পাইল ক্যাপ শেষ হয়ে পিয়ারের দ্বিতীয় লিফট হয়েছে। ২৬, ২৭নং পিলারের বিআইডাব্লিউটিএ’র চ্যানেলে, যা এখনো কাজ শুরু হয়নি। ২৮নং পিলারের ক্যাপের কাজ চলছে। ২৯, ৩০নং পিলারের পাইল ড্রাইভিংয়ের কাজ চলছে। ৩১নং পিলারের পাইলিং শেষে স্ক্রিন গ্রাউটিং হচ্ছে। ১নং পিলার থেকে ২০নং পিলার পর্যন্ত মাওয়া প্রান্তে আর বাকিগুলো জাজিরায়।
আরও জানায়, মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে ২১টি স্প্যান আছে। এরমধ্যে ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন ১১টি স্প্যান আছে ইয়ার্ডে। পদ্মাসেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসবে। জাজিরা প্রান্তে স্প্যানগুলোতে চারটি রোডওয়ে স্ল্যাব বসেছে। প্রস্তুত করে রাখা আছে প্রায় ৩৫০ রোডওয়ে স্ল্যাব। এছাড়া ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ২৭২টি স্ল্যাব বসেছে স্প্যানগুলোতে। পদ্মাসেতুতে তিনটি হ্যামারের মধ্যে ১৯০০ কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি হ্যামার সার্ভিসিংয়ে রয়েছে।
পদ্মাসেতুর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাজিরা প্রান্তে সেতুর ৩৩ ও ৩৪নং পিলারের ওপর ‘৬-সি’ স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা আছে চলতি মাসের ২০ তারিখ। এই স্প্যানটি বসালে দৃশ্যমান হবে সেতুর ১ হাজার ৫১৫ মিটার। এরপর প্রায় দুই মাস পর সেতুর ৩২ ও ৩৩নং পিলারের ওপর বসানো হতে পারে ‘৬-বি’ স্প্যানও।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে সে দেশেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
এনটি