শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ২টার দিকে জয়পুরহাট-বগুড়া সড়কের বানিয়াপাড়া পুলিশ বক্স সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কাদিপুর গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী হেনা বেগম (৩৪), পাঁচবিবি উপজেলার কড়িয়া গ্রামের হুমায়নের সাত মাসের শিশু হুমায়রা আক্তার, একই উপজেলার রতনপুর গ্রামের সামছদ্দিনের স্ত্রী জাকিয়া বেগম (৭০), উচনা গ্রামের আমির হোসেনের স্ত্রী জাহেরা বেগম (৫৫), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার দিলীপ মুমুর রিপা মুমু (৩) ও জয়পুরহাট নার্সিং ইন্সটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার (১৯)।
বাকি দু'জনের নাম-পরিচয় মেলাতে পারেনি হাসপাতাল, স্থানীয় প্রশাসনসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।
দুর্ঘটনা কবলিত বাসের যাত্রী জয়পুরহাট শহরের খঞ্জনপুর মহল্লার বাসিন্দা ফেরদৌস হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তিনি এমপি পরিবহন নামে ওই বাসে করে বগুড়া থেকে জয়পুরহাটে আসছিলেন। বগুড়ার চার মাথা থেকে কিচক বাজার পর্যন্ত বাসটি স্বাভাবিক গতিতে আসলেও হঠাৎ করেই চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন। এসময় জয়পুরহাট-বগুড়া সড়কের বানিয়াপাড়া পুলিশ বক্স সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। পরে তিনি হাসপাতালে এসে জ্ঞান ফিরে শুনতে পান দুর্ঘটনায় শিশু ও নারীসহ মোট আটজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।
জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক নূরুন্নবী বাংলানিউজকে বলেন, আহত ৩০ জনকে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও আট জনের অবস্থার আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মী, পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্কাউটের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জয়পুরহাটের স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাকির হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেটসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেককে ১২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সরকারি তহবিল থেকে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯ আপডেট: সময় ১৯৪০ ঘণ্টা
এনটি/জিপি