ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতার’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন

ঢাকা: আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন এখানে থাকতে পারেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন।

রোববার (১৬ জুন) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ জানান তিনি।

এর আগে রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন কদম ফোয়ারার সামনে থেকে ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

 

ডিসি মারুফ হোসেন বলেন, সোনাগাজী থানায় তার (ওসি মোয়াজ্জেম) নামে অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে। গ্রেফতারের পরপরই আমরা সোনাগাজী থানায় যোগাযোগ করেছি। সেই থানার প্রতিনিধি এলে তাদের কাছে মোয়াজ্জেমকে হস্তান্তর করা হবে। যতক্ষণ হস্তান্তর না করা হবে ততক্ষণ তাকে শাহবাগ থানায় রাখা হবে। আদালতে কখন তুলবে এটা সোনাগাজী থানা পুলিশের সিদ্ধান্ত।

২০ দিন পলাতক ছিল, এতোদিন তিনি কোথায় ছিলেন? কেনো তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি? সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি মারুফ হোসেন আরো বলেন, এটা বলা যাবে না। কারণ কেউ গ্রেফতারের পর বলবে না যে, সে কোথায় ছিল।

ওসি মোয়াজ্জেম সকালে আদালতে জামিনের জন্য গিয়েছিলেন, সেখান থেকে ফেরার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি সত্য কিনা? এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়, তিনি কোথাও গিয়েছিলেন কিনা। আমাদের কাছে আসা গোপন তথ্য অনুযায়ী আমরা কদম ফোয়ারা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করি।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কি বলেছেন? উত্তরে মারুফ হোসেন বলেন, আমাদের এই থানায় তার নামে কোনো মামলা নেই। তাই আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার কোনো কারণ নেই। তারপরেও আমরা মাত্র কিছুক্ষণ আগেই ধরেছি, এখনো কথা বলার সময় পাইনি।

এদিকে ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী সালমা সুলতানা জানান, আজ হাইকোর্টে তার আগাম জামিন আবেদন উপস্থাপন করা হয়েছিলো। আদালত আগামীকাল কজলিস্টে থাকবে বলে আদেশ দেন। এখন আপনারা তো জানেন তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। তাই আগামীকালতো আগাম জামিন আবেদন শুনানির সুযোগ নেই।

বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গাজী মো. মামুনুর রশিদ বলেন, দুপুর ১টার দিকে আইনজীবী একটি আগাম জামিন আবেদন সম্পূরক লিস্ট করে শুনানির জন্য আবেদন করেন। আদালত আগামীকাল আবেদন কার্যতালিকায় রাখার আদেশ দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা।

সোনাগাজীতে পুড়িয়ে হত্যা করা মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত এক মামলার আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন। বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এর দিন দশেক আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান নুসরাত। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দুইদিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।