তবে এসবের কারণ হিসেবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়াকে দায়ী করছেন যাত্রী ও চালকরা। ফলে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী, যাত্রী ও যানবাহন চালকদের।
জানা যায়, গত ঈদুল ফিতরের ১০দিন আগে এ সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করতে জেলা প্রশাসন নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কাজের ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে ওই মহাসড়কে চলাচলকারী চালক ও যাত্রীরা। ঈদের আগেই অধিকাংশ সড়ক সংস্কারের মাধ্যমে চলাচল উপযোগী করার আশ্বাস দিয়েছিলেন স্থানীয় সড়ক বিভাগ। তবে রাখতে পারেনি সেই আশ্বাসও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহাসড়কে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে রমজানের শুরুতেই নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ১৪ কিলোমিটার এবং বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের গুরুদাসপুরে কাছিকাটা এলাকার আত্রাই টোল প্লাজা সংলগ্ন সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সড়ক বিভাগ। এছাড়া চলাচলে অনুপযোগী বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক সংস্কার কাজও শুরু হয়।
নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ৩২ কিলোমিটার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ১৪ কিলোমিটার খানাখন্দ সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এ কাজের জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকার বরাদ্দ ধরা রয়েছে। মীর হাবিবুল আলম নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের নাটোর অংশের ৩২ কিলোমিটারের মধ্যে কয়েক কিলোমিটার এখনও খানাখন্দ অবস্থায় রয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ায় সড়কের কাঁচা অংশটুকুও কাঁদায় পরিণত হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে এ সড়কের অবস্থা এখন বেহাল দশা। সিংড়া উপজেলার খেজুরতলা, বন্দর, শেরকোল, সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা, বালুয়াবাসুয়া, জলারবাতা, চৌগ্রাম ও বাঁশের ব্রিজ এলাকার সড়কের অধিকাংশ স্থান খানাখন্দে ভরে গেছে।
বাসচালক হাবিবুল, শহিদুল, কাঊছার আলীসহ আরও অনেকে বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক মাস ধরে মহাসড়কটিতে দুর্ভোগ তাদের পিছু ছাড়ছে না। সড়ক সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
মোটরসাইকেল আরোহী মাহমুদুর রহমান বলেন, এ পথে দিন দিন দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। বৃষ্টি হলেই সড়কের দুর্ভোগে বেড়ে যায়।
নাটোর জেলা মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম বাংলানিউজকে বলেন, মহাসড়কের খানাখন্দের কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। হয়রানির শিকার হচ্ছে যাত্রীরা। আমরা খুবই অসহায় অবস্থায় আছি। অভিযোগ দেওয়ার কোনো জায়গা নেই। দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ হোক এটাই এখন চাওয়া।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো বাংলানিউজকে বলেন, ঈদুল ফিতর চলে গেলও কাজ এখনো শেষ হয়নি। সামনে আবার কোরবানির ঈদ আসছে। দ্রুত কাজটি শেষ করার জন্য সবসময় সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক সংস্কার কাজ বর্তমানে ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে টানা বৃষ্টির কারণে ঠিকাদারও কাজ করতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন।
নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ করতে না পারলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান নির্বাহী এ প্রকৌশলী।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
জিপি