মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে তৃতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন।
এসময় বাধ্যতামূলক পাটের মোড়ক ব্যবহার নিয়ে জেলা প্রশাসকদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, পণ্যে বাধ্যতামূলক পাটের মোড়ক ব্যবহারে যে আইন রয়েছে, সেটা যেনো বাস্তবায়ন হয়, সে নির্দেশনা আমরা ডিসিদের দিয়েছে।
তিনি বলেন, পাটের ব্যবহার বাড়াতে প্রতিটি উপজেলায় মাসে অন্তত দু’টি এবং বিভাগীয় ও জেলা শহরে যতোটা সম্ভব মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বৃদ্ধি করতে হবে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন শতভাগ বাস্তবায়ন করে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি ও জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহর এবং ঢাকার বড় বড় শপিংমলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বহুমুখী পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী সেন্টার ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পাটকল শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে আন্দোলনের বিষয়ে ডিসিদের কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে পাটমন্ত্রী বলেন, আমরা তো শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিয়েই যাচ্ছি। তারপরও শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোস সৃষ্টি করতে কাজ করছে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল। এ অসন্তোসকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য কাজ করেছে তারা।
মন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের পাওনার বিষয়ে বর্তমান সরকার সচেতন। এসব পাওনা পরিশোধের জন্য সরকার কার্যকরী ব্যবস্থাও ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে। তাই শ্রমিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে কেউ যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সেজন্য আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই শুনেছেন, একটি বিরোধী দলের নেতারা এ বিষয়ে ফোনালাপ করেছেন যে, এ অসন্তোসটা কীভাবে আরও বাড়িয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু আসলে যারা সত্যিকারের শ্রমিক, তারা আন্দোলন করতে চায় না। আমরা যখন বলেছি অর্থ দেবো, তার আগেই তারা অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। আসলে আমরা সরকার থেকে যখন যা প্রয়োজন হয়, তা দিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকরা যাতে বেতন পায়, সে ব্যবস্থা সবসময় করে যাচ্ছি। সুতরাং এটা একটা শ্রেণি আছে, যারা শ্রমিক অন্তোসের সুযোগ নেয়।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রোমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) এ পর্যন্ত প্রায় ৭০২ জন উদ্যোক্তা তৈরি করেছে। এ সব উদ্যোক্তা ২৮০ প্রকারের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করছেন। উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রচার ও প্রসার এবং বিক্রির লক্ষ্যে জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় জেলা/ উপজেলা পর্যায়ের সব সরকারি দফতরের দাফতরিক কাজে বহুমুখী পাটপণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং জেলা/উপজেলা পর্যায়ে মেলা ও প্রদর্শনী আয়োজনে ভূমিকা নিতে হবে।
পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনে বাংলাদেশকে আবারও সোনালী আঁশের দেশ হিসেবে রূপান্তর করে আনতে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন সুষ্ঠুভাবে শতভাগ বাস্তবায়নের জন্য সতর্ক মনিটরিং করতে তিনি সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
জিসিজি/টিএ