শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে এ সড়কের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ির চাপে রাজধানীর অন্যতম প্রবেশ মুখ আবদুল্লাহপুরে যানজট রয়েছে।
তৈরি পোশাককর্মী, নিম্ন আয়ের মানুষের ঢল এই পুরো ১২ কিলোমিটার জুড়ে। ফলে বাসগুলো মূলত যাচ্ছে আর যাত্রী নিচ্ছে। এ কারণেই এই জ্যাম। তবে পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশ আর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পরিস্থিতি। যে কারণে যাত্রাপথে বিঘ্ন ঘটছে বলে মন্তব্য করছেন যাত্রীরাও।
সরেজমিনে দেখা যায়, যানবাহনগুলো যাত্রা পথে যাত্রী নিচ্ছে ঠিকই, তবে পুলিশ কোনো পরিবহনকেই থামতে দিচ্ছে না। কোনো পরিবহন একটু ব্রেক কষে দাঁড়াতে গেলেই লাঠি হাতে তেড়ে যাচ্ছে কমিউনিটি পুলিশের সদস্য কিংবা করপোরেশনের কর্মীরা।
কখনো বা সার্জেন্ট নিজেই দৌড়ে যাচ্ছেন তাড়া দিতে। আর এভাবেই ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফলে একেবারে জট না লাগায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পার হওয়া যাচ্ছে এই ১২ কিলোমিটার পথ।
আবার কিছু কিছু জায়গায় থমকে দাঁড়াতে হচ্ছে। সেটা নেহায়েত সিগন্যালের কারণে। সাধারণ সময়েই যেখানে এই পথটুকু যেতে তিনঘণ্টা সময় লেগে যায়, সেখানে ঈদের মৌসুমে লাগছে একঘণ্টা। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যেও অনেকটা উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে শেরপুর যাচ্ছেন শামীমা রহমান। স্বস্তিতে বাসে যেতে পেরে খুশি তিনিও। বললেন, কল্পনাই করিনি একঘণ্টায় গাজীপুর চৌরাস্তা পার হতে পারবো। ভেবেছিলাম সন্ধ্যার আগেও বাড়ি পৌঁছাতে পারবো না। এখন তো দেখি দুপুরের মধ্যেই চলে যাবো!
তীব্র যানজট না লাগায় খুশি বাসের স্টাফরাও। তারা বলছেন, এবার ট্রিপ বেশি নেওয়া যাবে। ইনকামও বাড়বে।
তাসিন পরিবহনের চালক মো. আলম বলেন, জ্যাম যা আছে, এইডা ত বেশি না। এমনেই ত তিনঘণ্টা লাইগ্যা যায়। এইবার নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে।
গাড়ির চাপের কারণ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী পরিবহনগুলো থেকে অনিয়মিত পরিবহন বেশি। এইজন্য যানবাহনেরও চাপ রয়েছে। ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রো বাস, প্রাইভেট কারসহ রাজধানীর লোকাল পরিবহনগুলোও যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। তাদের গন্তব্য বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলায়।
জামালপুরের দিদারুল ইসলাম রাজধানীর একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে চাকরি করেন। ঈদের আনন্দ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। প্রাইভেট কারে তার সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী-পুত্রও।
যানজটবিহীন সড়কে স্বাচ্ছন্দ্যে যেতে পেরে বেশ আনন্দিত তিনি। বাংলানিউজকে বলেন, সকাল সাতটায় ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ১০টায় ময়মনসিংহে পৌঁছে গেছি। এটা বিরাট পাওনা। ট্রাফিক পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশ আর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আন্তরিকতার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে।
‘আসলে পরিবহনগুলো কোনো নিয়ম-ই মানতে চায় না। এরপরও তারা যে জ্যামটা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, এটাই অনেক। ধন্যবাদ তাদের দিতেই হয়। ’
তবে এই এক ঘণ্টার ধীরগতির যাত্রাপথ নিয়েও রয়েছে যাত্রীদের মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। তাদের বক্তব্য, ১২ কিলোমিটার পথ যেতে কেন এক ঘণ্টা লাগবে? এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এই পথটুকুর কারণেই ঢাকা-ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়কের সুফল নষ্ট হচ্ছে।
তবে ধৈর্য ধরার পক্ষেও রয়েছেন কেউ কেউ। তাদেরই একজন কায়সার আহমেদ শাকিল। তিনি বলেন, গাজীপুর পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন চলছে। এটা শেষ হলে, এই কষ্ট আর থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
ইইউডি/এমএ