ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মেয়র যখন সফল গরুর খামারি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
মেয়র যখন সফল গরুর খামারি গরু পরিচর্যা করছেন মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল। পৌর পরিষদে সময় দেওয়ার পর বাকি যে সময়টা পান তা ব্যয় করেন নিজ হাতে গড়ে তোলা গরুর খামারে। ধীরে ধীরে সেই খামারটির পরিসর বড় হয়েছে। তিনি হয়ে উঠেছেন জেলার গরু খামারিদের আইডল। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় বলছে মেয়র সাজেলের খামারটি জেলার সবচেয়ে বড় গরু খামার।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার পরশুরাম উপজেলার পৌর এলাকার গুথুমার নিজ গ্রামে মেয়র সাজেল তার নিজস্ব জমিতে গড়ে তুলেছেন ফেনী জেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার।

নিতান্তই শখের বশে গড়ে তোলা খামারটি যেমন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তেমনই উজ্জ্বল সম্ভবনাময় খামারের স্বীকৃতি লাভ করেছেন।
 
উপজেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের মতে, মেয়র সাজেল ফেনী জেলায় বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে বড় গরুর খামার করে প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জেলার বিভিন্নস্থানে বর্তমানে ৬০টির বেশি ছোট-বড় খামার থাকলেও জেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার গড়ে তুলেছেন মেয়র সাজেল।  

তার খামারে বর্তমানে রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক গরু। গত এক বছর যাবত কোরবানির ঈদে বিক্রির উদ্দেশে গরুগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। যার সম্ভাব্য বাজার দর হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা।  

এছাড়াও গত ছয় মাসে মেয়র সাজেল খামারের সহস্রাধিক গরু বিক্রি করেছেন। সাজেলের গরুর খামার এলাকায় ব্যাপক পরিচিত লাভ করায় স্থানীয়ভাবে গরুর চাহিদা পূরণ করে জেলার বাহিরেও তা বিস্তার লাভ করেছে।  

এছাড়া ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া উপজেলাসহ ফেনীর আশপাশের এলাকার খামারিরা তা দেখতে আসেন। পাশাপাশি বেকার যুবকরা মেয়র সাজেলকে দেখে গরু খামার করার দিকে ঝুকছেন।  

এদিকে, কোরবানির জন্য ফেনীসহ অন্য জেলা থেকেও লোকজন গরু কিনতে ছুটে আসছেন তার খামারে।

মেয়র সাজেল চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, নওগাঁ, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম থেকে উন্নত জাতের গরুগুলো ক্রয় করে নিয়ে আসেন তার খামারে। তার খামারের গরুগুলোকে কোনো প্রকার কৃত্রিম ওষুধ প্রয়োগ করা হয় না। প্রাকৃতিকভাবেই গরুগুলোকে লালন-পালন করা হচ্ছে। এ গরুর খামার পরিচালনার কাজে দুই শিফটে কাজ করেন অভিজ্ঞ ২৪ জন কর্মচারী।  

তিনি আরও জানান, গত দুই বছর ধরে গরুর খামার দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হয়েছেন তিনি। তার খামারে বর্তমানে প্রায় পাঁচ শতাধিক গরু রয়েছে। কোরবানির ঈদে তার গরুগুলো বিক্রি করা হবে।  

ভবিষ্যতে বড় আকারের একটি ডেইরি ফার্ম করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান মেয়র সাজেল।

এছাড়া তিনি বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৫৩টি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন। তার পুকুরে রুই, কাতল, বোয়াল, পাঙ্গাস, কই, শিং, মাগুরসহ বিভিন্ন দেশী জাতের মাছের চাষ করছেন।

চলতি বছরে জেলার সফল মৎস্য চাষি ও উপজেলায় টানা আট বার শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষি হিসেবে পুরস্কার লাভ করেছেন মেয়র সাজেল। মাছ চাষ ও গরুর খামারে স্থানীয় বেশকিছু বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসুলুল কাদের বাংলানিউজকে জানান, সাজেলের খামার বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছে। তার খামার দেখে অনেকে খামার করতে উৎসাহী হবেন।  

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মেয়রের খামারে গরু মোটা তাজাকরণ করা হচ্ছে। এ খামারে কোনো ধরনের ইনজেকশন দেওয়া হয় না। প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে খামারটি নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
এসএইচডি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।