ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

দই ছাড়া ঈদ জমে না বগুড়ার গৃহিণীদের!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৯
দই ছাড়া ঈদ জমে না বগুড়ার গৃহিণীদের! চাহিদার সঙ্গে দামও বেড়েছে বগুড়ার দইয়ের। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: রাত পোহালেই কোরবানির ঈদ। ঈদের নামাজ আদায় শেষে ত্যাগের মহিমায় পশু কোরবানি করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সে অনুযায়ী কেনাকাটাও প্রায় শেষ হয়েছে সবার। আসলেই কি শেষ? কিছু ভুলে যাচ্ছেন না তো? ঝাল ঝাল গরুর মাংসের পর মুখ মিষ্টি করতে দই কেনা হয়েছে তো?

ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় প্রত্যেক বছর ঈদুল আজহায় চাহিদা মতো দই কেনেন অনেকেই। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।

শেষ দিনের কেনাকাটায় তালিকার শীর্ষে রয়েছে সুস্বাদু দইয়ের নাম। ঈদের দিন অতিথি আপ্যায়নে সুস্বাদু দই চাইই চাই! তাই তো, গৃহিণীর দেওয়া বাজারের তালিকা ধরে অন্য জিনিসের পাশাপাশি শেষ বেলায় দই কেনার পর্ব সারতে ব্যস্ত সবাই।

রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে বগুড়া শহরের সাতমাথা ও আশপাশের এলাকায় গড়ে ওঠা দই-মিষ্টির দোকানগুলোতে নজর কাড়ে এমন দৃশ্য।

বগুড়ার দইয়ের খ্যাতি দেশজুড়ে। এমনকি দেশের বাইরেও এখানকার দইয়ের সুনাম রয়েছে অনেক বছর ধরেই। একারণে শুধু স্থানীয়রাই নয়, শহরের বাইরে থেকেও লোকজন আসেন বিখ্যাত বগুড়ার দই কিনতে। তবে, অন্য সময়ের চেয়ে এসময় দইয়ের দাম কিছুটা বেশি। ঈদের কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। তাই, সাধ্যের মধ্যে যে যতটুকু পারছেন, কেনার চেষ্টা করছেন।

তবে, বরাবরেই মতোই ক্রেতাদের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিক্রেতারা। তাদের ভাষ্য, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে দুধের দাম বেড়ে যায়। এতে স্বাভাবিক ভাবেই দইয়ের দাম বাড়বে। এখানে বিক্রেতাদের কোনো কারসাজি নেই। অন্য সময়ের মতোই সীমিত লাভেই বিক্রি করছেন তারা!

ঈদুল আজহায় দইয়ের বাড়তি চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী আব্দুল মোমিন বাংলানিউজকে বলেন, এ অঞ্চলের গৃহিণীরা ঈদের দিন অতিথিদের ঝাল খাওয়ানো শেষে মিষ্টি খাওয়াতে পছন্দ করেন। যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় এ প্রথা চলে আসছে। এ কারণে প্রত্যেক কোরবানির ঈদে দইয়ের চাহিদা বেড়ে যায়। বিক্রেতারাও বিষয়টি মাথায় রেখে দই উৎপাদন করেন।

দেশজুড়ে সুনাম বগুড়ার দইয়ের।  ছবি: বাংলানিউজ

সাইফুল বারী নামে এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন অতিথিদের ঝাল খাওয়ানোর পর দই খাওয়াতে না পারলে গৃহিণী নিজেকে তৃপ্ত মনে করতে পারেন না। তাই এখানকার সুস্বাদু দই কিনতে শেষ বেলায় দোকানে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে।

শাহিনা বেগম নামে এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, কোরবানির ঈদে বাসায় অনেক মানুষ আসে। এজন্য আগে থেকেই সব কিছু তৈরি করা থাকে। অন্তত এদিন কেউ কাউকে খালি মুখে যেতে দেন না। অতিথিরাও সামান্য হলেও খান। এর সঙ্গে একটু দই খাওয়াতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে হয়। একারণেই আজ বের হওয়া।

জানা যায়, প্রতি সরা স্পেশাল দই ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০ টাকায়, শাহী স্পেশাল দই ২৩০ থেকে বেড়ে ৩০০ টাকায়, বাটি দই ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৫০ টাকায়, ক্ষিরসা ৩২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৮০ টাকায়, চমচম, মৌচাকা, কালোজাম (বড়) প্রতি কেজি ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫০ টাকায়, রাজভোগ ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫০ টাকায়, সন্দেশ ৩৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, শহরের নামিদামি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এসব দই ও মিষ্টি আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৯
এমবিএইচ/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।