ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘সব শেষ হয়ে গেলোরে বাবা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৯
‘সব শেষ হয়ে গেলোরে বাবা’ গাবতলী হাটে গরু বিক্রি করতে আসা এক খামারি। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘ধানে লোকসান করেছি। পাট ও তামাকেও লোকসান করেছি। এবার গরু বিক্রিতে লোকসান করে সব শেষ হয়ে গেলোরে বাবা।’

রোববার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টায় গাবতলী পশুর হাটে মন খারাপের কারণ জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার কোসাবাড়ী এলাকার গরুর খামারি মোকাদ্দেস হোসেন কথাগুলো বলেন।

৩১ বছর ধরে ঢাকার বিভিন্ন হাটে গরু বিক্রি করার কথা উল্লেখ করে মোকাদ্দেস বাংলানিউজকে বলেন, যে গরু বাড়িতে ১ লাখ ৬০ হাজার দাম বলেছে, সেই গরু ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।

যে গরু এক লাখ ৭০ হাজার এবং ১ লাখ আশি হাজার টাকা বিক্রয়ের আশা ছিল, সেই গরুর দাম এখন এক লাখ ২০ হাজার টাকাও বলছে ক্রেতারা। এখন লোকসান করে হলেও গরু বিক্রয় করে বাড়ি যেতে চাই।  

একই এলাকার মন্টু হোসেন চারটি বড় গরু এনেছেন গাবতলী হাটে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল যে দু’টি গরুর দাম চেয়েছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার, আমি ৫ লাখ বলেছিলাম। সেই গরুর দাম আজ ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বলেছে ক্রেতারা। চারটি গরুর মধ্যে একটিও এখনো বিক্রি করতে পারি নাই। গরু আনতে প্রায় বিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। হাটের ভাড়া আছে। এই কয়েকদিনে গরু ও আমাদের খাওয়া-দাওয়া খরচ আছে। বিক্রি না করে বাড়িতে ফেরত নিয়ে গেলে আবারো ট্রাক ভাড়া লাগবে। সকাল পর্যন্ত একটিও বিক্রি করতে পারব কিনা বুঝতে পারছি না।  

কুষ্টিয়ার খোকসা এলাকা থেকে ২০টি গরু এনেছেন আল আমিন নামের আরেকজন খামারি। তিনি ১১টি বিক্রি করেছেন প্রায় দেড় লাখ টাকা লোকসান দিয়ে। এ খামারি নয়টি গরু এখনও বিক্রি করতে পারেননি।  

শুধু মোকাদ্দেস, মন্টু কিংবা আল আমিন নয় হাটের অধিকাংশ খামারি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের কোরবানির ঈদে গরু বিক্রয় করে অধিকাংশ খামারি লোকসান  করেছেন।   

গাবতলী পশুর হাটে ছোট এবং মাঝারি গরু বিক্রি হয়েছে বেশি। সে তুলনায় বড় গরুর ক্রেতা নেই। ফলে বেশিরভাগ বড় গরু বিক্রি হয়নি।

অন্যদিকে গাবতলী পশুর হাটে গরুর দাম কমে যাওয়ায় অধিকাংশ ক্রেতা তুলনামূলক কম দামে গরু ক্রয় করতে পেরে খুশি মনে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। কোরবানির হাটে এবারের দৃশ্য দেখে বাংলার চিরাচরিত প্রবাদটির কথা সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে যায় ‘কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৯
আরকেআর/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।