বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানান।
নিহত সুমা আক্তার (২২) নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার দেবকান্দা এলাকার নিজাম উদ্দিনের মেয়ে এবং গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বড়বাড়ি এলাকার ফজলুল হকের ছেলে মামুনের (২৫) স্ত্রী।
পুলিশ সুপার জানান, শ্রীপুর উপজেলার গিলারচালা এলাকায় সফিকুল ইসলাম বিপুলের বাড়িতে মামুন (২৫) ও তার স্ত্রী সুমা আক্তার (২২) ভাড়া থাকতো। সেখানে থেকে সুমা স্থানীয় পোশাক কারখানায় এবং মামুন ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করতো। পারিবারিক কলহ ও স্ত্রীর জমানো ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য মামুন তার স্ত্রী সুমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যাকাণ্ডের জন্য পলিথিন ব্যাগ, একটি চাকু, ৩টি ট্রাভেল ব্যাগ ও ঘুমের ওষুধ সংগ্রহ করে মামুন। এক পর্যায়ে ৮ আগস্ট রাতে সুমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে মরদেহের দুই হাত ও দুই পা কেটে ৮ টুকরো, নিতম্ব ও উরু ৫ টুকরো, বুক থেকে পেট পর্যন্ত এক টুকরোসহ ১৫ টুকরো করে।
তিনি আরও জানান, ৯ আগস্ট ভোরে মরদেহের ১০ টুকরো ট্রাভেল ব্যাগে করে সিংহশ্রী সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয় মামুন। মরদেহের অবশিষ্ট ৫টি টুকরো বাসার ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে পলিথিনে পেঁচিয়ে রাখে এবং একইভাবে নদীতে ফেলার সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। সুমার স্বজনরা মামুনকে ফোন করলে সে জানায় সুমাকে বাড়ি যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে শনিবার (১০ আগস্ট) স্বজনরা সুমার খোঁজ না পেয়ে শ্রীপুরে তার ভাড়া বাসায় যায়। ঘরের তালা ভেঙে ঘরের ভেতর খোঁজ করে না পাওয়ার পর ঘরে নতুন তালা লাগিয়ে চলে যান তারা। নতুন তালা লাগানোর কারণে মামুন মরদেহের অবশিষ্ট টুকরোগুলো ফেলে দিতে পারেনি।
ঈদের দিন সোমবার (১২ আগস্ট) সুমার বোন বৃষ্টি তার খোঁজ নিতে ফের ওই বাসায় যায়। এ সময় ঘরের ভেতর দুর্গন্ধ পেলে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে মরদেহের বাকি অংশগুলো দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে মরদেহের অংশগুলো উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহত সুমার পিতা নিজাম উদ্দিন শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাতে ঢাকার আশুলিয়া থানার কবিরপুর এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে মামুন এসব তথ্য পুলিশকে জানায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৯
আরএস/এইচএডি