সম্প্রতি মাগুরা সদর আমলী আদালতে অভিযোগ করেছেন সাখাওয়াত হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী। শহরের মীরপাড়ার এ বাসিন্দা জানান, তার ছেলে মাহবুবুল আলম হাসানকে সচিবালয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মাগুরার দোয়ারপাড়ের সুমন ও সাগর ১০ লাখ টাকা নেন।
২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে নগদ ও ব্যাংক চেকের মাধ্যমে এসব টাকা দেওয়া হয় তাদের। একই বছরের বিভিন্ন সময় অভিযুক্তরা আটজনকে চাকরিতে যোগদানের জন্য পৃথক নিয়োগপত্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার সই করা অফিস আদেশ দেন। এসব নিয়োগপত্র ও অফিস আদেশ পেয়ে সচিবালয়ে গেলে সুমন ও সাগর তাদের কোনো অফিস বা নির্ধারিত কাজ না দেখিয়ে বিভিন্ন দফতরে ঘোরাতে থাকেন। এতে ভুক্তভোগীদের সন্দেহ হলে তারা যাচাইয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখায় যোগাযোগ করেন। সেখানে তাদের দেওয়া ওইসব কাগজপত্র ভুয়া বলে চিহ্নিত হয়।
এসময় ভুক্তভোগীরা অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কোনো সদুত্তর দেননি, বরং টাকাও ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানান। পাশাপাশি, এ বিষয়ে পরে আবার যোগাযোগ করলে তাদের খুন করে মরদেহ গুম করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে আদালতে মামলা করেন অভিযুক্তরা।
মাগুরার পুরনো বাজার এলাকার বাসিন্দা মোসলেহ উদ্দিন কাশেম বাংলানিউজকে জানান, তিনি তার বোন ও অন্য একজনের চাকরির জন্যে ২০১৭ সালে সুমনকে ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন। পরে দু’ভাই মিলে ভুয়া নিয়োগপত্র ও অফিস আদেশের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি অভিযুক্ত সুমন, সচিবালয়ের পিয়ন শফিকুল ইসলাম যিনি সচিব সেজে তার বোনের ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন, মোর্তজা রনি নামে আরেক ব্যক্তি যিনি সচিবের একান্ত সহকারী পরিচয় দিয়েছিলেন- এ তিনজনের নামে ঢাকার মিরপুর ২ নম্বর মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলায় গত ২ আগস্ট র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেল হাজতে রয়েছেন সুমন।
ভুক্তভোগী কাশেম বলেন, সুমন ও সাগর তার বোন নুরুন্নাহার ও শফিকুল ইসলামকে সচিবালয়ে নিয়ে সার্ভিস বুক খুলে বেশ কিছুদিন কাজ করিয়েছেন। এমনকি, এক মাসের বেতনও দিয়েছেন। পরে, পুলিশ ভেরিফিকেশনের কথা বলে তাদের বাড়িতে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু, পুলিশ ভেরিফিকেশন না হওয়ায় খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে।
তিনি জানান, প্রতারক চক্রটি শুধু মাগুরা জেলার বিভিন্ন এলাকার ৩০ থেকে ৩৫ জন বেকার যুবককে চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে যথাসময়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
একে