ঢাকা, সোমবার, ২৭ মাঘ ১৪৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

চা-দোকানির খুনের রহস্য উদ্ঘাটন, মা-ছেলে গ্রেপ্তার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯
চা-দোকানির খুনের রহস্য উদ্ঘাটন, মা-ছেলে গ্রেপ্তার

নোয়াখালী: নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কুলশ্রী গ্রামের চা দোকানদার শাহ আলম (৫৮) হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যে খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মোবাইল ফোনে কলের সূত্রধরে কুলশ্রী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩৮) ও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাত শান্তকে (১৯) গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়।

দুপুরে গ্রেপ্তার হওয়া ইয়াছমিন ও শান্ত নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোয়েব উদ্দিন খান ও মুশফিকুল হকের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন তার কার্যালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এবিষয়ে বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি আরো জানান, আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের চিহ্নিত করি। একই সঙ্গে হত্যার সময় ব্যবহৃত একটি লাঠিও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার ইয়াসমিন আক্তার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কুলশ্রী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী।

নিহতের মেয়ে শারমিন আক্তারের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নিহত শাহ আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল আসে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি ঘরের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে চলে যান। পরে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। ওই তথ্যের সূত্র ধরে প্রযুক্তি সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইয়াছমিন আক্তার ও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ইয়াছমিনের বাবার বাড়ি থেকে গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পরবর্তিতে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছমিন আক্তার জানায়, ভিকটিম শাহ আলম মোবাইলে ফোন দিয়ে প্রায় তাকে বিরক্ত করত এবং গভীর রাতে বসত ঘরের দরজা জানালায় টোকা দিত। এ বিষয়ে ইয়াছমিনের ছেলে শান্ত নিহত শাহ আলমকে মোবাইল ফোনে শাসিয়ে দিলেও তিনি ইয়াছমিনকে উত্ত্যক্ত অব্যাহত রাখে। পরে ইয়াছমিন তার ছেলে শান্তর সঙ্গে আলাপ করে শাহ আলমকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াছমিন (৩ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক রাত একটার দিকে মোবাইল ফোনে শাহ আলমকে তার বাসায় ডাকে। এসময় ইয়াছমিনের ছেলে এবং তার এক বন্ধু শাহ আলমের যাওয়ার পথে ওঁৎ পেতে থাকে। ইয়াছমিনের ফোন পেয়ে ভিকটিম শাহ আলম ইয়াছমিনের বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে কুলশ্রী গ্রামের আবুল কালামের দোকানের সামনে এলে শান্ত ও তার বন্ধু শাহ আলমকে আটক করে দোকান ঘরের পেছনে নিয়ে যায়।

তাৎক্ষণিক ইয়াছমিনের ছেলে শান্ত ও তার বন্ধু মিলে শক্ত লাঠি দিয়ে শাহ আলমের ঘাঁড়ে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে শাহ আলম পড়ে গেলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।