সহপাঠীদের অভিযোগ, আহত নাইমুলকে উদ্ধার করে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলো কেন? অনুষ্ঠানস্থলের কাছেই তো সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ছিল।
শুক্রবার (০১ নভেম্বর) বিকেলে কিশোর আলোর অনুষ্ঠান চলাকালীন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হয় নাইমুল।
নিহত আবরার ওই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির দিবা শাখার ছাত্র ছিল। প্রতিষ্ঠানের আবাসিক ছাত্র নাইমুলের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী।
এ ঘটনায় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতিকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে শনিবার (০২ নভেম্বর) কলেজ ফটকের সামনে অবস্থান করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা।
‘আমার ভাই মারা গেলো, কিশোর আলো চুপ কেন?, ‘কিশোর আলোর অমানবিকতা, মানি না মানব না’ স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান তারা।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনার পর বিষয়টিকে লুকিয়ে অনুষ্ঠান চালিয়ে গেছে কিশোর আলো কর্তৃপক্ষ। নাইমুল আহত হওয়ার পর বিষয়টি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকেও জানায়নি। তারা নিজেরাই নাইমুলকে উদ্ধার করে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যালে নিয়ে গেলো। অথচ রেসিডেনসিয়ালের বিপরীতেই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল। আশেপাশে আরও অনেক হাসপাতাল আছে। এসময় নাইমুলকে মহাখালী নিয়ে সময় নষ্ট না করা হলে তাকে হয়তো বাঁচানো যেতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন>> কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, নাইমুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনায় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষ তাদের গাফিলতি এড়িয়ে যেতে পারে না। আহত হওয়ার পরেও কেন তারা বিষয়টি গোপন রেখেছে?
‘কিশোর আলো দাবি করছে, স্কুল ড্রেসে না থাকার কারণে তারা নাইমুলকে চিনতে পারেনি। কিন্তু নাইমুল যেখানে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়েছে, সেখানে সে একা ছিল না। তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা নিশ্চয়ই তাকে চিনতো। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং উপযুক্ত বিচার চাই। ’
ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (০২ নভেম্বর) বিকেলে তদন্ত কমিটির বিষয়ে কলেজটির অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম আহমেদ বলেন, শুক্রবার (০১ নভেম্বর) রাতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
ঘটনার দিন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণেশ গোপাল বিশ্বাস বলেন, কিশোর আলোর অনুষ্ঠানের মঞ্চের পেছনে নাইমুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মারা যায়। পরিবারের আবেদন অনুযায়ী ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, রেসিডেনসিয়াল শিক্ষার্থীদের পক্ষে তিন নভেম্বর কিশোর আলো কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে ফেসবুকে ইভেন্ট খোলা হয়েছে। ওই ইভেন্ট পেজে ঘটনার পর অনুষ্ঠানের সব ছবি, কীভাবে নাইমুলকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সবকিছুর ছবি প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়েছে। কাছেই সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মতো হাসপাতাল ছেড়ে ইউনিভার্সেল মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাওয়ার পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
পিএম/টিএ