ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

রাজশাহীতে সেই অধ্যক্ষের মামলা, আটক  ২৫

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৯
রাজশাহীতে সেই অধ্যক্ষের মামলা, আটক  ২৫

রাজশাহী: রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের মামলা দায়েরের পর শরিবার (০২ নভেম্বর) রাতভর অভিযান চালিয়ে ২৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

এছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করারও চেষ্টা চলছে। তবে ঘটনার মূল হোতা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভ ও তার অনুসারীদের এখনও ধরতে করতে পারেনি পুলিশ।

   

শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে ক্যাম্পাসের মসজিদের সামনে থেকে টেনে-হিঁচড়ে পুকুরের পানিতে নিয়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় রাত ১০টার দিকে অধ্যক্ষ মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে চন্দ্রিমা থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় রাতেই অভিযান শুরু করে পুলিশ। আটক করা হয় ২৫ জনকে।

রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. গোলাম মোস্তফা জানান, অধ্যক্ষ রাতে ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ৫০ জন অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেন। এরপর সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে রাতেই মহানগরীর বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অভিযান চালানো হয় এবং ২৫ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, আটকদের সঙ্গে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে না তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। বাকিদের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। এরপর রোববার দুপুরের মধ্যেই তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

এদিকে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে টেনে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের সেই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে কেন্দ্রে সুপারিশও পাঠানো হয়েছে।  

শনিবার (০২ নভেম্বর) রাতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ছাত্রলীগের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই জরুরি সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে রাতে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি রকি কুমার ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, ওই সভায় ঘটনাটি তদন্তের জন্য মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ কুমার রায়কে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।  

এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডাকা হয়। ওই সভায় অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভসহ ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীকে ইনস্টিটিউট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কারিগরি বোর্ডের কাছে চিঠি পাঠানোর কথা রয়েছে।  

শনিবার দুপুরে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা সৌরভকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাগবিতণ্ডা হয়।  

পরে দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ এবং তার অনুসারীরা অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করে। নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর তারা অধ্যক্ষকে টেনে-হিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়।

ঘটনাস্থলে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, অন্তত ১০/১৫ জন ছাত্র অধ্যক্ষকে টেনে-হিঁচড়ে দ্রুতগতিতে ক্যাম্পাস মসজিদের পাশের পুকুরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।  

কেউ অধ্যক্ষের হাত ধরে টানছিল আবার কেউ পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছিল। মুহূর্তের মধ্যেই অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা গিয়ে অধ্যক্ষকে পুকুর থেকে তোলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
এসএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।