সম্প্রতি বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে রবিউল করিমের মা বলেন, সন্তান হারানোর বেদনা যে কতোটা কষ্টের, এটা শুধু যে মা তার সন্তানকে হারিয়েছে, সে বুঝে। আমি আমার দুই সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অভিভাবক এখন বাংলাদেশ সরকার ও পুলিশ প্রশাসন। আমার ছোট ছেলে ও নাতি-নাতনির জন্য যা করা প্রয়োজন, তারাই কিছু একটা করবে বলে আমার বিশ্বাস। আমার বড় ছেলে (রবিউল করিম) শহীদ হয়েছে। আমার ছেলের মতো শত শত রবিউল পুলিশ প্রশাসনে আছে, তারাই আমাদের জন্য কিছু করবে।
করিমন নেছা বলেন, আমার রবিউল প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ব্লামস নামে একটি বিদ্যালয় করেছিল। আমি মনে করি, এটা এখন দেশের পুলিশ বাহিনীর স্কুল। এই স্কুলটা যদি ভালোভাবে চলতো এবং সরকারিভাবে এটার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিতো, তবে আমার রবিউলের স্বপ্ন পূরণ হতো।
নিহত রবিউলের ছোট ভাই শামসুজ্জামান শামস বাংলানিউজকে বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় আমি আমার ভাইকে হারিয়েছি, ঠিক তেমনি এ ঘটনায় অনেক বিদেশি নাগরিককে প্রাণ হারাতে হয়েছে। এ মামলার রায়ের জন্য যে শুধু আমাদের প্রত্যাশা তা নয়, এ মামলার রায় সারাবিশ্বের প্রত্যাশা। যেন অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। আমি বিশ্বাস করি, এ জঘণ্যতম ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। এ রায়ের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ আইনের প্রতি আরো শ্রদ্ধাশীল হবে।
নিহত রবিউল করিমের স্ত্রী উম্মে সালমা বাংলানিউজকে বলেন, আমি চাই এ জঙ্গি হামলার সঙ্গে যারা জড়িত ও মদদদতা, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। উপযুক্ত শাস্তি হলে এ ধরনের অপরাধ করতে আর কেউ সাহস পাবে না।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের। ওই রাতে এ ঘটনা জানতে পেরে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। পরের দিন সকালে সেনাবাহিনী কমান্ডো অভিযান চালায় এবং অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন। পুলিশ ১৮ বিদেশিসহ ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
ইএআর/আরবি/