বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে কেশবপুরে নেওয়া হবে। পরে বেলা ১১টায় স্থানীয় পাবলিক ময়দানে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমেছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য প্রমুখ।
এছাড়া ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে তাকে স্মৃতিচারণ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শোক জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ, তার সাবেক একান্ত সচিব (প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে) বতর্মানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মঞ্জুরুল হাফিজ, সিনিয়র সহকারী সচিব (বর্তমানে উচ্চত্তর ডিগ্রিতে অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নরত) কবির হোসেন, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহানসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নেতারা। অনুরূপভাবে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম নামাজে জানাজায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সচিব অংশ নেন।
এদিকে ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন, সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফাসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন বাংলানিউজকে বলেন, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা এমপি ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। বুধবার বেলা ১১টায় কেশবপুর পাবলিক ময়দানে নামাজে জানাজায় দলের সব পর্যায়ের নেতাকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
কেশবপুর উপজেলার ইউএনও নুসরাত জাহান বাংলানিউজকে বলেন, ইসমাত আরা সাদেকের মরদেহ বুধবার সকালে হেলিকপ্টারে করে কেশবপুর পৌঁছাবে। এজন্য কলেজ মাঠে হেলিপ্যাড নির্মাণসহ সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছি। পরে বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সামনে পাবলিক ময়দানে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এতে কেশবপুরের সবস্তরের মানুষকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
ইসমাত আরা সাদেকের স্বামী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থা চলাকালে ২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। সাদেক দম্পত্তির একমাত্র ছেলে তানভীর সাদেক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ আমেরিকায় থাকেন। মেয়ে নওরীন সাদেক আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার। তিনিও স্বামী সন্তান নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করেন।
ইসমাত আরা সাদেক ১৯৪২ সালের ১২ ডিসেম্বর বগুড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বগুড়ার সাতানী জমিদার বাড়ির মরহুম মাহবুবুর রহমান চৌধুরী ও মরহুমা সায়েরা খাতুনের একমাত্র কন্যা ইসমাত আরা ১৯৫৬ সালে বগুড়া ভি এম গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি, ১৯৫৮ সালে ঢাকার হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৬০ সালে ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
স্বামী প্রয়াত আবু শরাফ হিফজুল কাদের সাদেক (এ এস এইচ কে সাদেক) ছিলেন সাবেক সচিব, দু’বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সফল শিক্ষামন্ত্রী।
ইসমাত আরা সাদেক দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ (কেশবপুর) নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হলে তাকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়। পরবর্তীতে ১৫ জানুয়ারি তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
ইউজি/আরবি/