ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নিষ্প্রাণ ওয়াহেদ ম্যানশনের দেয়ালে পোড়া ক্ষত!

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
নিষ্প্রাণ ওয়াহেদ ম্যানশনের দেয়ালে পোড়া ক্ষত!

ঢাকা: পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার সেই ওয়াহেদ ম্যানশন। স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের চিহ্ন দেয়ালে এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে চারতলা এ ভবনটি। পুরো ভবনের চারপাশে পোড়া ইটের কালো চিহ্ন। সেই সঙ্গে মনের ক্ষতও শুকায়নি চকবাজারের চুড়িহাট্টার বাসিন্দাদের। বছর ধরে বয়ে বেড়াচ্ছেন সেই রাতের দুঃসহ স্মৃতি। 

২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১১টার দিকে ব্যস্ত চকবাজারে হঠাৎ হানা দেয় একটি বিকট শব্দ। সেই বিকট শব্দই যে জীবনের কাল হবে, তা হয়তো ভাবতেও পারেননি চুড়িহাট্টার মানুষগুলো।

মুহূর্তের মধ্যেই বিকট শব্দ থেকে আগুনের স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। আর তাতেই একে একে ঝরে যায় ৭১টি প্রাণ। আহতরাও কিছুতেই ভুলতে পারছেন না সেই ভয়াবহ রাতের স্মৃতি। এখনো সেই রাতের দৃশ্য তাদের তাড়া করে ফেরে।  

পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় গিয়ে দেখা যায়, আগের মতো ব্যস্ত হয়ে উঠেছে চুড়িহাট্টা, তবে শুধু প্রাণ নেই ওয়াহেদ ম্যানশনের। আশপাশের পুড়ে যাওয়া দোকান সংস্কার করে ব্যবসা করছেন কেউ কেউ। তবে নিষ্প্রাণ শুধু ওয়াহেদ ম্যানশন।  

সরজমিনে দেখা যায়, চারতলা এ ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পুরো ভবনের দেয়ালে আগুনের ক্ষত। পুড়ে যাওয়া ইট আর কালো ধোঁয়া মনে করিয়ে দিচ্ছে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কথা। তবে ভবনের নিচতলায় শুধু সামনের কয়েকটি দোকান সংস্কার করা হয়েছে। সাটার কিংবা রং কিছুই করা হয়নি। আর আশপাশে পুড়ে যাওয়া কয়কটি দোকান সংস্কার করে ফের ব্যবসা চালু করেছেন কেউ কেউ। ফুড জংশন, রাজ হোটেল ও মোল্লা বিরিয়ানী হাউজ নামের কয়কটি দোকান নতুন করে ব্যবসা পরিচালনা করছে।

ভবনের মালিক সম্পর্কে খোঁজ নিতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা কিছুই জানেন না। ভবনের উপরের অংশ যেভাবে ছিলো, সেভাবেই এখনো পড়ে আছে।     

চুড়িহাট্টার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি সেই রাতের স্মৃতি কোনো কিছুতেই ভুলতে পারছি না। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এ ট্র্যাডেজি ভুলে যাওয়ার মতো নয়।  

বাসিন্দা মাসুমের শূন্যদৃষ্টি এখনও যেন চোখের সামনে আগুন আর সবকিছু ছাই হয়ে যাওয়া দেখছে। তিনি বলেন, এখনো চোখের সামনে ভাসে পোড়া লাশের গন্ধ। সবকিছু ছাই হয়ে যাওয়ার দৃশ্য।  

আতিকুল হক প্রাণে বাঁচলেও এই আতঙ্ক তাকে অনেকদিন তাড়া করে ফেরাবে জানিয়ে বলেন, আমি পাশের হোটেলে বসে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ শব্দ শুনে হোটেলের সাটার লাগানোর চেষ্টা করে লোকজন। আমি ততক্ষণে বেরিয়ে গেছি। পরে হোটেলের সাটার বন্ধ করলে কেউ আর বের হতে পারেনি। সবাই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
টিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।