সোমবার (৪ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন পাবলিক হেলথ কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৯টি মোবাইলফোন, ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও ৯২২ আমেরিকান ডলার জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- হায়দার আলী, মাহমুদুল হাসান ওরফে মাসুম, জামিরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, শেখ আরাফাত ওরফে জনি, ইমরুল হাসান ওরফে ইমন, সাইফুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, শাহজালাল, আক্তারুজ্জামান, মাহমুদুল হাসান ওরফে সাব্বির, আবিদ উল মাহমুদ ওরফে আবিদ, সোহাইল সরদার, ওবায়দুল ইসলাম ওরফে সুমন, মাহমুদ হাসান ওরফে শরীফ, মাজেদুল ইসলাম ওরফে মুকুল ও সোহাগ হাসান।
সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান নামে একজন বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে সৌদি আরবে যান এবং এখনো তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি বিভিন্ন সময় জিহাদের পক্ষে ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন বক্তব্য এবং মুসলিমদের পক্ষে গাজওয়াতুল হিন্দ নামক স্থানে জিহাদ করার আহ্বান জানিয়ে অডিও-ভিডিও প্রকাশ করেন।
গ্রেফতারকৃতরা এসব বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে যুদ্ধের প্রস্তুতি স্বরূপ সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করেন।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা পলাতক রবিউল সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং গত মার্চের মাঝামাঝি সময় তারা পরস্পর যোগাযোগ করে হিজরতের সিদ্ধান্ত নেন। তাবলিগ-জামায়াতের আড়ালে সাতক্ষীরা বা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তারা ভারত-কাশ্মীর সীমান্ত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
তাদের বলা হয়েছিলো করোনার দুর্যোগে আকাশ থেকে এক ধরনের গজব নেমে আসবে এবং সব কিছু ধোঁয়াছন্ন হয়ে যাবে তখন সীমান্তে কোনো পাহারা থাকবে না। এই সুযোগে তারা যেন সৌদি আরবে চলে আসেন। এই বিশ্বাস নিয়ে গত ১৮ মার্চ তারা প্রথমে সাতক্ষীরা ও পরে যশোর সীমান্তের কাছে বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান করেন ভারতে যাওয়ার জন্য।
তাদের আরো জানানো হয়েছিলো আগামী ৪০ দিন সূর্য উঠবে না, আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যাবে, কাফিররা সবাই মারা যাবে, ঈমানদারদের শুধু হালকা কাশি হবে। ঈমাম মাহাদীর আগমন এই রমজানে সমাগত, তাই তারা যেভাবে পারে সেভাবে যেন সৌদিতে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারা সাতক্ষীরা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে পার হতে না পেরে ঢাকা হয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সে মোতাবেক তারা ঢাকায় এসেছিলেন।
এডিসি তৌহিদ বলেন, সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের প্ররোচণায় এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ছাত্র গত জানুয়ারিতে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে গমন করে আর ফিরে আসেননি।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় সা’দ, কাউসার, শরীফ, তোফাজ্জল, গিয়াসউদ্দিন, আলী আজম এবং রাশেদ নামে আরও ৭ জন ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে যোগদানের উদ্দ্যেশে সৌদিআরব হিজরত করেছেন বলে গ্রেফতারকৃতরা জানায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জেএমবির সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২০
পিএম/এএটি