ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

পায়রা সেতুর পলেস্তারা ধস, গুজব থেকে সর্তক থাকার আহ্বান প্রকৌশলীর

মো. জহিরুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
পায়রা সেতুর পলেস্তারা ধস, গুজব থেকে সর্তক থাকার আহ্বান প্রকৌশলীর

পটুয়াখালী: বরিশাল কুয়াকাটা মহাসড়কের দীর্ঘতম সৌন্দর্যমণ্ডিত ও দেশের দ্বিতীয় এক্সটাডোজ ক্যাবল বক্স গার্ডার পায়রা (লেবুখালী) সেতুতে টেনশন দেওয়ার সময় দুই ফিটের মত জায়গায় নিচের অংশের পলেস্তার ধসের একটি ছবি গোপনে আদান প্রদান শুরু হয়েছে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা ধরনের গুঞ্জন দেখা দিয়েছে।

বুধবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ব্রিজের দক্ষিণ পাশের একটি স্পানে টেনশন দেওয়ার সময় দুই ফিটের মতো একটি অংশ ধসে পরে।

এদিকে, ব্রিজের আশপাশে স্প্যান ধস হতে পারে বলেও এক ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলেও জানা গেছে।

পায়রা (লেবুখালী) সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনা সম্পর্কে আমি জানি, আমরা সর্তক অবস্থানে আছি। টেনশন দেওয়ার সময় প্রেসারে দুই ফিটের মত জায়গার পলেস্তার ধসে পরছে। এটা ঝুঁকি বা তেমন খারাপ কিছু না। ব্রিজের জন্য এটা ক্ষতিকরও নয়। যারা টেকনিক্যাল বিষয় বুঝে না, তারাই এটা নিয়ে গুঞ্জন রটাচ্ছে। এ থেকে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরা মূল ব্রিজের কাজে এগিয়ে আছি। ইতোমধ্যে পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষা ও করোনার কারণে আমরা পিছিয়ে ছিলাম ইতোমধ্যে সেখান থেকে ৩০ শতাংশ কাজ অগ্রগতি হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ব্রিজের সার্বিক কাজ সম্পন্ন করে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, পায়রা সেতুর ডিজাইনের সেতু সাধারণত হয় না।  বাংলাদেশে এই সেতুটি দ্বিতীয় বারের মতো নির্মিত হচ্ছে। এ ধরনের ব্রিজের এক্সপার্ট কম। মূলত ব্রিজের ফাউন্ডেশন ও মূলত পানির গতিপথ পরিবর্তনের কারণেই কাজ বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া ব্রিজের ডিজাইনও পরিবর্তন হয়েছে।

ইতোমধ্যে সেতুর ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক ব্যবস্থা স্থাপিত হবে।

নির্মাণাধীন পায়রা (লেবুখালী) সেতুতে পদ্মা সেতুর থেকেও ৫০ মিটার বড় দুইটিটি স্প্যান বসনো হবে। নান্দনিক এক্সটাডোজ ক্যাবল বক্স গার্ডার ব্রিজটিতে নদীর মাঝে মূল ব্রিজ হবে ৬৩০ মিটার। এজন্য ২০০ মিটারের ২টি স্পান ও দু’পাশে দুইটি স্প্যান ১১৫ মিটার করে হবে। যা দেশের সবচেয়ে বড় সেতু পদ্মার ব্রিজের স্পানের থেকেও বড়।

চার লেনবিশিষ্ট ১ হাজার ৪৭০ মিটার (৪,৮২০ ফুট) দৈর্ঘ্যরে ১৯.৭৬ মিটার (৬৪.৮ ফুট) এক্সট্রা বক্স গার্ডার ব্রিজটির উভয়দিকে ৭ কিলোমিটার জুড়ে নির্মাণ করা হবে অ্যাপ্রোচ সড়ক। ব্রিজটির প্রাক্কলিত নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৪৬ কোটি টাকা।

এছাড়াও সেতুটি নদীর জলতল থেকে ১৮.৩০ মিটার উঁচু হবে। ফলে নদীতে নৌযান চলাচলে কোনো অসুবিধা হবে না। সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত হবে সেতুটি।

বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা নদীর উপর ‘লেবুখালী সেতু’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দার উম্মুক্ত হচ্ছে সর্বদক্ষিণের।

কুয়েত সরকারের অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান চাইনিজ কোম্পানি সেতুটি নির্মাণ করছে। দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে সেতুটির নির্মাণকাজ। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

২০১২ সালের ৮ মে একনেক সভায় প্রকল্পটি সরকারের অনুমোন লাভ করে এবং ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা নদীর উপর পায়রা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের পায়রা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।