ঢাকা, শুক্রবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ার নিখোঁজ কলেজছাত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২১
বগুড়ার নিখোঁজ কলেজছাত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন ...

বরিশাল: বগুড়া থেকে স্বামীর সঙ্গে বরিশালে এসে নিখোঁজ হওয়ার ১০ দিন পর উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি কলেজছাত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

এরপর নাজনীন আক্তার নামে ওই কলেজছাত্রীর মরদেহ তাদের স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন।

তিনি জানান, বুধবার (০২ জুন) গৌরনদীর বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে বস্তাবন্দি এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। বগুরা থেকে নিখোঁজ হওয়া কলেজছাত্রীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ও ছবি মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ওই মরদেহ তারই। পরে বগুড়া থেকে এসে স্বজনরাও মরদেহ শনাক্ত করেন।

এর আগে দুই দিন বরিশালের গৌরনদী ও বাবুগঞ্জে বগুরা পুলিশের সদস্যরা নাজনীন আক্তারের স্বামী সাকিব হোসেন হাওলাদারকে নিয়ে মরদেহের সন্ধানে অভিযান চালিয়েছিল, তবে মরদেহ না পেয়ে মঙ্গলবার তারা বগুড়ায় ফিরে যান।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রধরে গত এক বছর আগে বগুড়া সদর উপজেলার সাপগ্রাম এলাকার আব্দুল লতিফ প্রমাণিকের মেয়ে ও বগুড়ার গাবতলী সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নাজনীন আক্তার (১৯) সঙ্গে বিয়ে হয় সাকিব হোসেন হাওলাদারের।

সাকিব হোসেন হাওলাদার (২৪) বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার নতুনচর জাহাপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তবে সাকিবের বাবা আব্দুল করিমের পরিবার কাজের জন্য গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বন্দর সংলগ্ন হরহর গ্রামে বসবাস করেন।

নাজনীন আক্তারের ভাই আব্দুল আব্দুল আহাদ জানান, গত ২৪ মে সাকিব তার বাবার অসুস্থতার কথা বলে নাজনীনকে নিয়ে বরিশালে আসেন। পরে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ ও কোনো ধরনের যোগাযোগ না থাকায় ২৬ মে বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ও সেনানিবাসে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, নাজনীন নিখোঁজের বিষয়ে জানতে সোমবার বিকেলে সাকিব হোসেনকে জিজ্ঞাসবাদ করা হয়। এসময় সাকিব অসংলগ্ন কথাবার্তা বললে সন্দেহ হয়। পরে তাকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নাজনীনকে গৌরনদীর হরহর গ্রামের বাবার ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে এসে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে মরদেহ গুমের বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।

সাকিব জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের একপর্যায়ে গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে কলেজছাত্রী নাজনীনকে বিয়ে করেন। ২৪ মে নাজনীনকে নিয়ে বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামে বাবার ভাড়া বাসায় আসেন। সেখানে এসে নাজনীন জানতে পারে তার বাবা আব্দুল করিম পেশায় ভ্যানচালক। আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। মূলত তার স্ত্রী বাড়িতে এসে তাদের টিনের ঘর থেকে ক্ষেপে যায় এবং ভিক্ষুক বলাসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

আর তাকে হত্যার ঘটনার সময় তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। সাকিব বলেন, গালাগাল করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাড়ির পাশের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে দেন।

এ বিষেয়ে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান জানান, গ্রেফতার সাকিবের দেওয়া তথ্যানুযায়ী গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় বগুড়া পুলিশ সেপটিক ট্যাংকে পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে। ট্যাংকের মধ্যে নাজনীনের শরীরের বিভিন্ন অংশের চামড়া এবং পরিধেয় ওড়না পাওয়া গেলেও মরদেহ পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন
>> তথ্য গোপন করে বিয়ে, ভিক্ষুক বলায় স্ত্রীকে হত্যা

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২১
এমএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।