ঢাকা, সোমবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

স্বাস্থ্যকর্মীকে পেটানোর ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২১
স্বাস্থ্যকর্মীকে পেটানোর ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা প্রতীকী ছবি

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফলে চেয়ারম্যানের ইচ্ছানুযায়ী করোনার টিকা না দেওয়ায় এক ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকর্মীকে পিটানোর ঘটনায় মামলা হয়েছে।  

সালিশ বৈঠকে কিশোরীকে বিয়ে করে সারাদেশে আলোচিত হওয়া পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের সেই চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।

সোমবার (০৯ আগস্ট) দুপুরে স্বাস্থ্যকর্মী আল-আমিন সিকদার বাদী হয়ে বাউফল থানায় মামলা করেছেন বলে থানা সূত্র নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যানের ইচ্ছানুযায়ী করোনার টিকা না দেওয়ায় কিল ঘুষি আর লাথি মারেন স্বাস্থ্যকর্মী আল-আমিন সিকদারকে। এ ঘটনায় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এছাড়াও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক তাসলিমা নাজনিন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) প্রশান্ত কুমার সাহাকে।

আল-আমিন সিকদার ওই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন করে কনকদিয়া ইউনিয়নে ৬০০ জনকে করোনার টিকা দেওয়ার  জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু চেয়ারম্যান বেলা ১১টার দিকে এসে স্বাস্থ্যকর্মীদের বলেন, যারা ভ্যাকসিন নিতে আসছে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি রেখে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন।

এ সময় তারা (স্বাস্থ্যকর্মী) সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনের কথা বললে তিনি (শাহীন চেয়ারম্যান) ক্ষিপ্ত হয়ে আল আমিন শিকদারকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি এবং লাথি মারেন। একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। এ সময় ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক তাছলিমাকে ও ইউএইচও কে গালাগালি করেন। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্যকর্মী আল-আমিন সিকদার বাদী হয়ে বাউফল থানায় অভিযোগ দাখিল করেন।

তাসলিমা নাজনিন বলেন, ‘যে অশ্লীল ভাষায় আমাকে আর ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছে তা মুখে শোভা পায় না। ’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে  স্বাস্থ্যকর্মী আল আমিন সিকদার বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। যারা আইডি কার্ড নিয়ে আসবে তারা টিকা পাবে। অথচ এখানে টিকা দিতে এসে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে টিকা দিচ্ছে। বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় আমি এর প্রতিবাদ করেছি। কাউকে মারধর কিংবা গালাগালি করার অভিযোগ সত্য না।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মুন বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জানা যায়, ২৫ জুন সালিশ বৈঠকে এক কিশোরীকে জোর করে বিয়ে করে ব্যাপক আলোচিত হন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। এর আগে একাধিক সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে মারধর করে ব্যাপক সমালোচিত হন। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি পরপর দুবার নৌকা প্রতীক নিয়ে কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।