ঢাকা, সোমবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের জীবন মান উন্নয়নে চট্টগ্রাম-ভাসানচর নৌপথ প্রকল্প

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২১
রোহিঙ্গাদের জীবন মান উন্নয়নে চট্টগ্রাম-ভাসানচর নৌপথ প্রকল্প

ঢাকা: ভাসানচরের সঙ্গে নৌযোগাযোগ উন্নয়নের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এতে সম্ভাব্য খরচ হবে ৩৬৮টি কোটি টাকা।

প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ওই চরের রোহিঙ্গাদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য চট্টগ্রাম, হাতিয়া ও নোয়াখালী থেকে জনবল ও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী পরিবহন করা যাবে।

নতুন এ প্রকল্পের নাম ‘চট্টগ্রাম-হাতিয়া হতে ভাসানচরের সাথে নৌযোগাযোগ উন্নয়ন’। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।  

বিআডব্লিউটিএ প্রকল্পের সারসংক্ষেপ পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে পাঠিয়েছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন গড়ে তোলা হয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা এখানে যারা ব্যবস্থাপনার কাজে আছেন তাদের যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য সেবা ও রশদ পরিবহন করতে হয়। কিন্তু এই রুটে সারা বছর চলাচলের উপযোগী থাকে না। এসব কথা বিবেচনা করেই চট্টগ্রাম-হাতিয়া হয়ে ভাসানচরের সঙ্গে সারা বছর নৌযোগাযোগ সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধেই প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। ’

বিআইডব্লিটিউ সূত্র জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত ভাসানচর নোয়াখালী জেলাধীন হাতিয়া উপজেলার একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এর পূর্বে সন্দীপ, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। এ দ্বীপে নৌযানই একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। দু’টি নৌপথে এ দ্বীপে যাতায়াত করা হয়, যার একটি ভাসানচর-হাতিয়া বয়ারচর চেয়ারম্যান ঘাট এবং অপরটি ভাসানচর-চট্টগ্রাম। ভাসানচর-হাতিয়া-বয়ারচর চেয়ারম্যান ঘাট নৌপথটি সারা বছর চলাচলের উপযোগী থাকলেও ভাসানচর-চট্টগ্রাম রুটটি শুষ্ক মৌসুমে নৌযান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ভাসান চর ও ঠ্যাঙ্গার চরের মধ্যবর্তী চ্যানেল এবং আশপাশের নৌপথ ড্রেজিং করা হলে সারা বছর নৌচলাচল অব্যাহত থাকবে। এখানে জোয়ার-ভাটার প্রভাব রয়েছে।  

প্রকল্পের আওতায় মেইন চ্যানেলে ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ঘনমিটার ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হবে। এর গভীরতা হবে ১ দশমিক ৫৫ মিটার। বিদ্যমান অ্যাপ্রোচ চ্যানেলে ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হবে। এই নৌরুটটি খননের ফলে চট্টগ্রাম-হাতিয়া-ভাসানচর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। এতে মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনেও সুবিধা হবে। ফলে উপকৃত হবেন স্থানীয়রা। তাছাড়া শুস্ক মৌসুমে নদীতে পানি থাকার কারণে পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ নৌবাহিনী ভাসানচরে বাস্তুচ্যুত এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের জন্য আশ্রয়ন-৩ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। এসব অবকাঠামোর মধ্যে ১৪৪০টি শেড, ১২০টি উচু ভবন, হাসপাতাল, বিনোদন কেন্দ্র, লেক, অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রাস্তা, ২টি স্টিল জেটি, গ্যাংওয়ে ৪টি পন্টুনসহ বিভিন্ন সুবিধাদি স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচর সংলগ্ন সাগর পথেই বিআইডব্লিউটিসির অভ্যন্তরীণ নৌপথে জাহাজ ও যাত্রীবাহী লঞ্চ সন্দ্বীপ, হাতিয়া রুটে চলমান এবং সদ্য জেগে ওঠা গাংগুরিয়ার ও ভাসানচরের মধ্যবর্তী পথে অভ্যন্তরীণ জাহাজগুলো চলছে।  

তবে নৌ রুটের গভীরতা শুষ্ক মৌসুমে কমে যাওয়ায় গাংগুরিয়া/ঠ্যাঙ্গার চরের বাইরে দিয়ে জাহাজগুলো যাতায়াত করে। উক্ত রুটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায় সব মৌসুমে জাহাজ চলাচলের জন্য নাব্যতা রক্ষা করা জরুরি। এ বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে কারিগরী প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিবেদন তৈরির জন্য একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। এসবের আলোকে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২১
এমআইএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।