ঢাকা, রবিবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

চোরাই গাড়ির জিপিএস ডিভাইসও বিকল করে দেন তারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২১
চোরাই গাড়ির জিপিএস ডিভাইসও বিকল করে দেন তারা

ঢাকা: রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা গাড়ি চোর চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব জানায়, মূহুর্তেই যে কোনো গাড়ির লক ভাঙা বা বিকল্প চাবি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতে সক্ষম চক্রটি।

এমনকি গাড়ি শনাক্তের জিপিএস ট্যাকিং ডিভাইসও বিকল করে দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান তারা। এরপর গাড়ির মালিককে কল করে অর্থ আদায় কিংবা গাড়ি বিক্রি করে দেয় চক্রটি।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দিনগত রাত থেকে বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গাড়ি চুরি চক্রের পাঁচজনকে আটক করা হয়।

আটক পাঁচজন হলেন- সোহেল (২৬), সাগর (২৩), সাকিব হোসেন (২৫), হাসান (২৬) ও কামরুজ্জামান (৩৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি পিকআপ ভ্যান, সাতটি টায়ার রিং, দুটি টায়ার, একটি টি টুলস বক্স, একটি চাবির ছড়া ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, আটক সংঘবদ্ধ চক্রটি পরস্পরের যোগ সাজোশে গত তিন বছর ধরে রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিনি পিকআপ ভ্যান চুরি করে আসছে। আটক সোহেল ও সাগর ঢাকার একটি হাইস্কুল ও নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজে পড়াশোনা করতেন। তারা সম্পর্কে আপন ভাই। তারা উভয়েই মাদকাশক্ত।

পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ও মাদকের টাকা জোগাড় করতেই গাড়ি চুরি শুরু করে তারা। বিশেষ করে সোহেলের গাড়ি চালানোর দক্ষতা থাকায় পিকআপ ভ্যানের লক ভাঙা ও যেকোনো চাবি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করার বিষয়ে অভিজ্ঞ। এছাড়া গাড়িতে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইস দ্রুত শনাক্ত করে অকেজো করে দিতে সক্ষম সাগর।

তারা ২০২০ সালে গাড়ি চুরি মামলায় কুমিল্লায় কারাগারে ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে মাদক মামলার গ্রেফতার সাকিবের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে হাসান ও কামরুজ্জামানকে নিয়ে গাড়ি চুরির চক্র গড়ে তোলে।

তিনি বলেন, পার্কিংয়ে থাকা পিকআপ ভ্যান তারা বেশি চুরি করতো। ড্রাইভার বা মালিকের অনুপস্থিতিতে সুবিধামত সময়ে বিশেষ কৌশলে গাড়ির লক ভেঙে ও বিশেষ ধরনের মাস্টার চাবি দিয়ে স্টার্ট দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেত।

এছাড়া মাদকসেবী ড্রাইভারের সঙ্গে সক্ষতা তৈরি করে পিকআপ ভ্যান চুরি করতে নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করতো। এজন্য গাড়ি চুরি করে মালিকের কাছ থেকে আদায় করা টাকার একটি অংশ ড্রাইভারকে দিতেন তারা। এর বাইরে চালকদের বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক প্রয়োগ করে অচেতন করে পিকআপ ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যেতো।

চোরাই গাড়ির মালিককে কল দিয়ে গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতো। এর বাইরে চোরাই গাড়ির রং পরিবর্তন করে ভুয়া নম্বর প্লেট লাগিয়ে কম দামে বিক্রি করে দিতো। এই দুই প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হলে গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করে দিতো তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২১
পিএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।