পাবনা: বৃদ্ধ তাজু ইসলাম। দেহের জীর্ণশীর্ণ গড়ন।
স্বর্ণার এমন আন্তরিকতা দেখে চোখের পানি আটকাতে পারলেন না বৃদ্ধ তাজু। মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করলেন তাকে। জানালেন কষ্টের কথা। বৃদ্ধ বয়সেও কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয় তাজুকে। দুই ছেলে থাকলেও তার দেখভাল করেন না।
বুধবার (১১ আগস্ট) বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা পেয়ে তিনি বলেন, ‘তোমারে বসুন্ধরা গ্রুপযে এত কষ্ট করি সাহায্য করে দেছে তার জন্যি দুয়া করি বাবা। আল্লা তার শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখুক। পরিবারের বালা-মুসিবত দূর করুক। ’
কষ্টে দিনাতিপাত করছেন আরেক উপকারভোগী জহুরা বেগম। তিনিও সহায়সম্বলহীন। এক ছেলে আছে, তবে মানসিক প্রতিবন্ধী। বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্যসামগ্রী পেয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লা বসুন্ধরা বেটারের জানমাল ভালো রাখুক। বেটারা সুখে থাকুক। তোমারের খেয়েই তো বেঁচে আছি বাবা। তোমরা না দিলে কনে পাব। ’
বুধবার (১১ আগস্ট) পাবনা জেলার সদর উপজেলায় তাদের মতো ৫০০ অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় সকলকে ১০ কেজি চাল, তিন কেজি ডাল ও তিন কেজি আটা দেওয়া হয়। পাবনা জেলা স্কুল মাঠে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন শুভসংঘের সদস্যরা।
এ সময় উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, করোনার এই ক্রান্তিকালে সরকারের পাশাপাশি যারা বেসরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছেন এটি দেশপ্রেমের উদাহরণ। দেশের মানুষের জন্য তারা কাজ করেন এটাই আমাদের বড় পাওয়া। এই মহামারির মধ্যে সবার বসুন্ধরা গ্রুপের মতো এগিয়ে আসা উচিত বলে আমি মনে করি। এই মানবিক কাজের জন্য আমি বসুন্ধরা গ্রুপকে ও শুভসংঘকে আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। করোনা মহামারির সময়ে আপনারা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। মানুষের ভিড়ে যাবেন না। বারবার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুবেন। যারা কর্মজীবী তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করবেন। একান্ত প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হবেন না। আর বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য সবাই মন থেকে দোয়া করবেন যেন আপনাদের আবার সহযোগিতা করতে পারে।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে আরো উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হুজ্জাতুল্লাহ, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মো. ইমরান হোসেন, সদস্য শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন, পাবনা জেলা শাখার সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস, সাধারণ সম্পাদক শেখ রাফসান যানী সজিবসহ নাইম খান, পূজা, উর্মী, রাসেল, জনম, রাইসুল, রাসেল ইসলাম, রাশেদ খান, সাগর হোসাইন, অন্তর খান, পিয়াস খান, সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান, স্বর্ণা খাতুন, সাকিবুল ইসলাম শুভ, জীবন কুমার সরকার, জালাল প্রামাণিক ও উত্তরা ইউনিভার্সিটির সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন রনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২১
এনটি