খুলনা: শরতের আকাশে বহুরূপী মেঘের খেলা। কখনও সাদা মেঘ, কখনও কালো মেঘ।
বুধবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে ও সন্ধ্যায় সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে নদীর চারপাশের নৈসর্গিক শোভা উপভোগ করেন ভ্রমণ পিপাসুরা।
লকডাউন শিথিল করার পর বন্দি জীবন থেকে বেরিয়ে কিছুটা নিশ্বাস নিতে চাইছেন তারা। তাই খুলনার আশপাশের মানুষরা আবারও আসছেন এখানে।
নান্দনিক সৌন্দর্য ও আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর কারণে রূপসা সেতু বরাবরই খুলনার মানুষের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। নদীর তীরে অনেক ফিসারিজ, ডকইয়ার্ড, শিপইয়ার্ড এবং কারখানা রয়েছে। এ নদীতে মাছ ধরে অনেক জেলে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেতুর ওপরে উঠলে দূরে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
রূপসা সেতুতে বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে আসা বটিয়াঘাটা ফুড ব্যাংক ও ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি মিরাজ শেখ বাংলানিউজকে বলেন, অনেকদিন পর সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে রূপসা নদীর অপার্থিব সৌন্দর্য দেখছি। নদীর অকৃত্রিম বাতাস, বিশাল জলরাশির ঢেউ, মুক্ত আকাশ উপভোগ করতে ভালো লাগছে। সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে শহরের সৌন্দর্য যেমন দেখা যায়, তেমনি নোঙর করা বিভিন্ন জাহাজ ও নৌযান দেখা যায়। এসব দেখতে ভীষণ ভালো লাগছে।
বিরাট বাজার এলাকা থেকে ঘুরতে আসা নাসিম উদ্দিন নামে এক যুবক বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনে এতদিন অনেকটা গৃহবন্দি ছিলাম। কোথাও ঘুরতে যাইনি। তাই আজ ঘুরতে এলাম।
আবার অনেকে প্রাকৃতিক পরিবেশে কর্মব্যস্ত দিনের ক্লান্তি দূর করতে এসেছেন। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আড্ডায় মেতে উঠেছেন তারা। বিশেষ করে টোল প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় মানুষের ভিড় ছিল বেশি।
সন্ধ্যা নামার পর সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত বৈদ্যুতিক সোডিয়াম বাতি ভিন্ন রূপ ও বৈচিত্র্যতা এনে দেয়। এ সময় সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যান অনেকে।
সন্ধ্যায় রূপসা সেতুতে দাঁড়ালে মনোরম দৃশ্য যেকোনো পর্যটককে আকর্ষণ করবে। বিশেষ করে যখন বাতাসে প্রচণ্ড গতিতে রূপসা নদীর ঢেউগুলো যখন দুই পাড়ে আছড়ে পড়ে, তখন অন্যরকম মুহূর্ত সৃষ্টি হয়।
সেতুর দুই পাশে নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সবচেয়ে বেশি ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি আর চানাচুরের দোকান। ভ্রমণ পিপাসুরা চাইলে সেখান থেকে খাবার কিনে খান।
সেতুর পূর্ব পাড়ের জাবুসা গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনের পর আবারও মানুষ রূপসা সেতুতে ভিড় করছেন। বিকেল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত নানা শ্রেণির মানুষ ঘুরে বেড়ান। কেউ কেউ ছোট নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে সেতু এলাকায় ঘুরছেন।
রূপসা সেতুতে টোল আদায়কারী নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ রনি বাংলানিউজকে বলেন, রূপসা নদীর সৌন্দর্য দেখতে আবারও মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন। লকডাউনের কারণে এতদিন সেতু এলাকা অনেকটা ফাঁকা ছিল। এখন আবারও মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে রূপসা সেতু।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২১
এমআরএম/এমআরএ