ঢাকা: পশুখাদ্য (ঘাস) বোঝাই ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পরে পঞ্চাশোর্ধ তিন কৃষক প্রাণে বেঁচে ফিরবেন এটা তাদের কাছে অলৌকিক মনে হচ্ছে। তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারে থাকা ঘাসের বোঝা ধরেই দেড় ঘণ্টা ভেসেছিলেন নদীতে।
উদ্ধারের পর ট্রলারের মাঝি মাহির উদ্দিন বলেন, অন্তার মোড় থেকে ভেসে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় একটি ট্রলার আমাদের দেখে। এ সময় ওই ট্রলার ও পুলিশ আমাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে। আরেকটু গেলেই মাঝ নদী। সেখানে গেলে হয় তো কেউ আর আমাদের আর খুঁজে পেত না।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) তিন কৃষক দুর্গম চর থেকে ঘাস কেটে বাড়ি ফেরার সময় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার অন্তার মোড় এলাকায় দুপুর ২টার দিকে তাদের ট্রলারটি স্রোতের কারণে ডুবে যায়। ওই ট্রলারের মাঝি মাহির উদ্দিনের বয়স ৫১ বছর। আর কৃষক রমজান শেখ (৬৫) ও আব্দুল লতিফ খান (৭০) ছিলেন। তাদের বাড়ি একই উপজেলার অন্তার মোড ও মজলিশপুরে।
মাহির উদ্দিন বলেন, তারা তিনজন গোয়ালন্দের দেবগ্রাম ইউনিয়নের বেথুরী এলাকার চরে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। বিকেলে ঘাস নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অন্তার মোড় এলাকায় আসার পরে প্রচণ্ড স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডুবে যায় তাদের ট্রলারটি। তার ট্রলারে পানি উঠতে থাকায় রমজান শেখ ও লতিফ মণ্ডলকে ঘাসের বোঝা ধরে বসে থাকতে বলি। ট্রলার ডুবে যাওয়ার পরে আমরা ঘাসের বোঝা ধরে রাখার কারণে স্রোতের তোড়ে আমাদের প্রায় আট কিলোমিটার দুরের উজানচর ইউনিয়নের চর করনেশন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে গোয়ালন্দ থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তা আমাদের উদ্ধার করা হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, আমরা দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাটের ভাঙন এলাকায় অবস্থান করছিলাম। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে কয়েক জন নদীতে ভাসছেন বলে স্থানীয়রা জানান। ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে লিটন বেপারীর ট্রলার নিয়ে একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাদের উদ্ধার করতে যান। তিন কৃষকের কাছাকাছি যাওয়ার আগেই স্রোত তাদের অনেক দূর নিয়ে যায়। পরে বিআইডব্লিউটিএর একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও স্থানীয় একটি ট্রলার নিয়ে চর করনেশন থেকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উদ্ধার করে সবাইকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২১
এসই/আরবি