বরিশাল: বরিশালে ১৫ বছরের কিশোরসহ কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের এক কনেস্টাবল মাদকসেবীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩ টার দিকে বরিশাল নগরের ফলপট্টি এলাকায় মারধরের ঘটনা ঘটে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৫ বছরের কিশোর রায়হানসহ পুলিশ কনেস্টাবল সাগর হোসেনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা বলছে, ওই পুলিশ কসেন্টাবল কিশোরকে নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য ঘটনাস্থলের সামনে এক ভবনের ছাদে ওঠার চেষ্টা করছিল। আর সেসময়ই তাকে বাধা দেওয়া হলে হট্টগোল বেধে যায়।
পুলিশ কনেস্টাবল সাগর হোসেন জানান, তিনি রায়হানের মাধ্যমে জানতে পারেন বরিশাল নগরের ফলপট্টি এলাকার একটি ৫ তলা ভবনের তিনতলায় কিছু উশৃঙ্খল লোক মাদক সেবন করছে। এমন খবরে বিষয়টি তিনি পর্যবেক্ষণে ঘটনাস্থলে যান। তবে ওই ভবনের ওপরে ওঠার আগেই তাকে বাধা দেওয়া হয় এবং কিছু সময় পরে ওপর থেকে কয়েকজন লোক এসে ওপরে ওঠার কারণ জানতে চান।
কনেস্টাবল আরও বলেন, ওই লোকগুলো আমার পরিচয় পাওয়ার পরই রায়হানকে ধরে ওপরে নিয়ে যায় এবং মারধর করে। এরপর তারা মিথ্যে অভিযোগ তুলে আবার আমার কাছে আসে এবং মারধর করে। সেইসাথে রায়হানকে দিয়ে মিথ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে এলাকাবাসীর সামনে আমাকে হয়রানি করে ও ভিডিও ধারণ করে। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাকে উদ্ধার কর।
এদিকে কিশোর রায়হান জানায়, সে ঢাকা-বরিশাল রুটের সুন্দরবন লঞ্চে চাকরি করে। সাত দিন আগে বরিশাল নদী বন্দর এলাকায় পরিচয় হয় পুলিশ কনেস্টাবল সাগর হোসেনের সাথে পরিচয় হয়। পুলিশ কনেস্টাবল সাগর হোসেন ও তার বাড়ি যশোরে হওয়ায় তাকে মামা বলে ডাকেন।
রায়হান আরও জানায়, ঘটনার আগে ফলপট্টি এলাকার ওই ভবনের ওপরে কিছু লোক মাদক সেবন করছিল। যে বিষয়টি তিনি কনেস্টাবল সাগরকে জানায়। পরে কনেস্টাবল সাগর সেখানে যায়। এসময় ওই লোকজন রায়হানকে ধরে নিয়ে গিয়ে পুলিশ নিয়ে আসার অপরাধে মারধর করে। এসসময় ওই পুলিশ কনেস্টাবলের বিরুদ্ধে কিছু খারাপ কথা বলার জন্য শিখিয়ে দেয় এবং না বললে আরও মারধর করার কথা বলে। কিন্তু কনেস্টাবল সাগর সে ধরনের কোন কাজই করেনি বলে দাবি কিশোর রায়হানের।
যদিও ওই ভবনের বৃদ্ধ এক ব্যক্তি জানান, অসামাজিক কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে সাগর নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দিয়ে কিশোর ছেলেটিকে নিয়ে রুপা শপিং প্লাজার ছাদের ওপরে যাচ্ছিলো। এসময় তাকে আইডি কার্ড দেখাতে বললে সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম বাংলানিউজকে জানান, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হবে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। আপাতত রায়হানকে আমাদের কাছে রাখা হয়েছে, আইনানুগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাকে অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২১
এমএস/এনএইচআর