ঢাকা, সোমবার, ২৭ মাঘ ১৪৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

তরমুজের বাম্পার ফলন, আবাদে ঝুঁকছে কৃষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
তরমুজের বাম্পার ফলন, আবাদে ঝুঁকছে কৃষক

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় অফ সিজনে বাম্পার ফলন হচ্ছে তরমুজের। তরমুজ চাষ করে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

ফলে তরমুজ চাষে ঝুঁকছে স্থানীয় কৃষকরা।

উপজেলার বড় জোড়া গ্রামে আবাদ হয়েছে ১০ একর জমিতে সুপার কুইন জাতের তরমুজ।

ফেব্রুয়ারি-মে মাস পর্যন্ত গরমকালে সুস্বাদু তরমুজ বাজারে পাওয়া যায়। তবে এখন আর মৌসুমি ফল নয় এটি। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি (বেশি শীত) মাস বাদে বছরের বাকি ১০ মাসই চাষ হচ্ছে অফ সিজনের তরমুজ।

সরেজমিন দেখা যায়, কৃষকের তৈরি মাচার নিচে শতশত তরমুজ ঝুলে রয়েছে। তরমুজের ওজন ধরে রাখার জন্য নেট ব্যাগ দিয়ে মাচার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। বালাইমুক্ত রাখতে তরমুজ বাগানে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ বসানো হয়েছে। এতে পোকা-মাকড়ের হাত থেকে তরমুজগুলো রক্ষা পাবে।  তরমুজগুলো হবে বিষমুক্ত। লতানু গাছের তরমুজগুলোর গায়ের রং কালো, ভেতরে টকটকে লাল। খেতে খুব সুস্বাদু।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, সারা বছর জল ও স্থলে পতিত জায়গায় মাটি কেটে বেড তৈরি করে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়। চারাগুলো বেড়ে ওঠার জন্য বেডের পাশে পানির উপর মাচা তৈরি করে দেওয়া হয়। চারা রোপণের ৩০ দিনের মধ্যে ফুল ও ফল ধারণ করে এবং ৪৫ থেকে ৫০ দিন পর ফল পরিপক্ব হয়।

হারুয়া ব্লকের বড়জোড়া কলিয়াকান্দা গ্রামের কৃষক হেলিম মড়ল বাংলানিউজকে বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে আমরা ছয়জন কৃষক মিলে উপজেলায় সর্বপ্রথম মালচিং পেপার ব্যবহার করে তরমুজ চাষ শুরু করেছি। মালচিং পদ্ধতি কৃষকদের শাক-সবজি উৎপাদনে একটি আধুনিক প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সবজি জাতীয় ফসল আবাদ করলে আগাছা হয় না। গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম হয়। গাছ সুস্থ-সবল হয়, ফলনও হয় বেশি।

তরমুজ চাষি সামিরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি ৭০ শতক জমিতে সিনজেনটার সুগার কুইন জাতের তরমুজের চারা রোপণ করেছেন। রোপণকৃত গাছগুলোতে তরমুজ ধরতে শুরু করেছে। প্রতি ১০ শতক জমিতে তরমুজ চাষে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। এতে আয় হবে প্রায় ৫০হাজার টাকা। এ হিসেব অনুযায়ী তিনি ৭০শতক জমি থেকে ৩ লাখ ৫০হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তরমুজ চাষী আমানুল্লাহ জানান, জমিতে ধান পাট চাষ করতে যে খরচ হয় তরমুজ চাষে খরচ হয় তার অর্ধেক মুনাফা হয় বেশি। তাই তিনি ৪৫ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তাকে অনুসরণ করে একই গ্রামের কৃষক শাহ জাহান ১০শতক, শফিকুল ইসলাম ৩৩ শতক, নজরুল ইসলাম ১০ শতক ও শান্ত মিয়া ৪০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বাংলানিউজকে জানান, তরমুজ একটি অর্থকরী ফসল। এ ফল ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। অর্থনৈতিক ভাবে বেকার যুবক ও কৃষককে স্বাবলম্বী করে তুলতে অফ সিজনে তরমুজ চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১

এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।