ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্রোতের তোড়ে ৪ কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
স্রোতের তোড়ে ৪ কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন ছবি : বাংলানিউজ

ভোলা: ভোলার মেঘনা নদীতে স্রোতের তোড়ে ভেঙে পড়ছে পাড়, বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ জনপদ।

বর্তমানে ভোলা সদরের রাজাপুর ইউনিয়নের জোড়খাল পয়েন্ট থেকে চর মোহাম্মদ আলী পয়েন্ট পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে ভাঙন।

ইতোমধ্যে সেখানে সাড়ে ৭'শ মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে দু’টি মসজিদ, দু’টি স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে- নদীর গতিপথ পরিবর্তন, তীব্র স্রোত, উজানের পানি বেড়ে যাওয়া ও ডুবোচরের কারণে ভাঙন বেড়েছে। তবে  ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে ৪৮০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ (বালুভর্তি বিশেষ ব্যাগ) ও টিউব ফেলার চেষ্টা করছেন তারা।

এ বিষয়ে ভোলা পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে স্রোত আগের চেয়ে অনেক বেশি। এ কারণে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। তবে ভাঙনরোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জোড়খাল পয়েন্টে ২০০ মিটার এবং চর মোহাম্মদ আলী পয়েন্টের ২৮০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও টিউব ফেলা হচ্ছে। এ দু’টি পয়েন্টে প্রায় ৭৬ লাখ টাকার কাজ চলছে। পরবর্তীতে চার কিলোমিটার এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ শুরু হবে।

সরেজমিনে জোড়খাল পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়ে কয়েকটি শুন্য ভিটা। কয়েকদিন আগেও এসব ভিটায় ঘর ছিল। পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছিলেন নদী পাড়ের মানুষ। কিন্তু সর্বনাশা মেঘনা যেন সব কেড়ে নিয়েছে তাদের। আশ্রয় হারিয়েছেন তারা। এখন কোথায় আশ্রয় নেবেন- তাও জানা নেই।

ক্ষতিগ্রস্ত রুব্বান ও রওশন বিবি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গরীব মানুষ, নতুন ঘর তোলার সামর্থ্য নেই। নদী বসত-ভিটা কেড়ে নিছে, আমরা এখন কোথায় যাবো? আমাদের ঠিকানা নেই।

আ. রশিদ ও আ. হাই বলেন, গত কয়েক দিনের ভাঙনে নদী পাড়ের অনেক ঘর বিলীন হয়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে আছি। আমরা নতুন ঠিকানা চাই। সরকারের কাছে সহায়তার দাবি জানিয়েছেন তারা।

অন্যদিকে, চর মোহাম্মদ আলী পয়েন্টে ভাঙনের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। ভাঙনে অন্তত অর্ধশতাধিক ঘর বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া বসত-ভিটা, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে মেঘনা।

ওই এলাকার বাসিন্দা নিরব ভূঁইয়া, নাহিদুল ইসলাম, সেলিম ভূঁইয়া, রানী বেগম ও মাহিনুর বাংলানিউজকে জানান, জোয়ারের সময় কম হলেও ভাটার সময়  ভাঙন বেড়ে যায়। এক রাতেই ৪০/৫০ হাত জায়গা নদীতে চলে গেছে। অনেক মানুষ অন্যত্র ঘর সরিয়ে নিয়েছেন। আমরাও ভাঙনের মুখে। নদী আমাদের জমি-বসতঘর কেড়ে নিচ্ছে।

রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যেভাবে ভাঙন চলছে, তাতে পুরো ইউনিয়ন বিলীন হয়ে যেতে পারে। এমনকি শহর রক্ষা বাঁধও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে শতাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২১
এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।