বগুড়া: যমুনা নদীর পানি বেড়ে বগুড়ায় বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢল ও বৃষ্টিতে জেলার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনার পানি বেড়েছে।
অন্যদিকে, বাঙালি নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ৪টার দিকে বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বগুড়ার নির্বাহী প্রকৗশলী মো. মাহবুবুর রহমান।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢলে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় নদী তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন নিচু এলাকার বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দূরবর্তী চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলগুলো এবং এসব এলাকার রোপা, মাসকলাই, মরিচ, স্থানীয় জাতের গাঞ্জিয়া ধানসহ ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। বগুড়ায় মূলত আগস্টের মাঝা মাঝি সময় থেকেই যমুনায় পানি বাড়া শুরু হয়। তবে গত ২৬ আগস্ট দুপুরে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বন্যায় এ উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, বোহাইল, কাজলা, চন্দনবাইশা, সারিয়াকান্দি সদর, হাটরশরপুর, কুতুবপুর, ও কামালপুর ইউনিয়নের ৬৮টি গ্রামের ১২ হাজার ৭০০ পরিবারের ৫০ হাজার ৮০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে জি আরের ৫২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীতে পানি বাড়ার ফলে এ উপজেলায় ১৩৫ হেক্টর রোপা আমন, ১২ হেক্টর বীজতলা, ১০ হেক্টর সবজি, ২০ হেক্টর জমির মাসকলাইসহ সর্বমোট ১৭৭ হেক্টর ফসলি জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম কবির বাংলানিউজকে জানান, সারিয়াকান্দি উপজেলায় ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দু’টি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি মাদরাসায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও বন্যায় ৪৪টি পুকুরের ১০ মেট্রিক টন মাছ বন্যায় ভেসে গেছে।
পাউবো বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয় ১৬ দশমিক ৭০ মিটার। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার হিসেব অনুযায়ী, নদীর পানি ১৭ দশমিক ৩৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, বাঙালি নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৮৫ মিটার। এ নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উজানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তাতে যমুনায় আরও কয়েকদিন দিন পানি বাড়া অব্যাহত থাকতে পারে।
তবে, পানি বাড়লেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙণের কোনো আশঙ্কা নেই মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২১
কেইউএ/এসআরএস