ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভাতিজাদের ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২১
ভাতিজাদের ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা!

কুমিল্লা: কোনো দুর্বৃত্ত কিংবা প্রতিপক্ষ নয়, নিজের সন্তানকে নিজেই কুপিয়ে হত্যা করেন বাবা। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজাদের ফাঁসাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর।

তিনি জানান, কুমিল্লার চান্দিনার বসন্তপুর গ্রামের সোলেমান জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজাদের ফাঁসাতে তিনি তার মেয়ে সালমা আক্তারকে (১৪) গত ১ অক্টোবর হত্যা করেন। এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন সোলেমান ও তার দুই ভাইসহ সাতজন। পরে গত ২ অক্টোবর বাড়ির পাশের পুকুর থেকে সালমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে, মেয়ে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন সোলেমান।
  
জানা যায়, মাদ্রাসাছাত্রী সালমাকে হত্যার কয়েকদিন আগে নিজেদের কাউকে আহত করে ভাতিজাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় কিনা তা নিয়ে এক উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করেন সোলেমান। এ কাজে সোলেমানের উকিল শ্বশুর আবদুর রহমান তাকে সহায়তা করেন। আবদুর রহমান সম্পর্কে সালমার নানা হন। হত্যাকাণ্ডের দিন আবদুর রহমানের বাড়িতে তাদের আলোচনা হয় । এ সময় হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাসহ কাকে হত্যা মামলার আসামি করা হবে তা নিয়েও। কিন্তু মা ও বাকি সন্তানদের সামনে সালমাকে হত্যা করা যাবে না-এ চিন্তা থেকে খুব কৌশলে স্ত্রী ও দুই ছেলে, এক মেয়েকে নিজের শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে দেন সোলেমান। আর সালমা রান্নাবান্না করবে এমন কারণ দেখিয়ে তাকে বাড়িতে রেখে দেওয়া হয়। আবদুর রহমানের বাড়িতে পরিকল্পনা করে রাতের কোনো এক সময় বাড়িতে প্রবেশ করেন সোলেমানসহ অন্য খুনিরা।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বরাত দিয়ে তানভীর বলেন, প্রথমে সালমাকে শ্বাসরোধ করা হয়। এরপর তাকে এলোপাতাড়ি গলা, পেট, কাঁধ ও পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে পাশের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় সোলেমান নিজেও অস্ত্র দিয়ে মেয়েকে আঘাত করেন। তাছাড়া সোলেমানের দুই ভাই লোকমান ও বাতেন, প্রতিবেশী আবুল হোসেন, মূল পরিকল্পনাকারী আবদুর রহমান, প্রতিবেশী শফিউল্লাহ ও সোলেমানের বন্ধু খলিল হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। হত্যাকাণ্ডের পর সোলেমান ও হত্যাকারীরা সোলেমানের ঘরের বেড়া কেটে দেন। হত্যাকাণ্ডের চারদিন পর সালমার বাবা সোলেমানকে গলায় ছুরিকাঘাতে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।  

পুলিশের ধারণা ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে নিজের গলায় নিজে ছুরি চালান সোলেমান। মাত্র সাত শতক জমি নিয়ে ভাতিজাদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ থেকে এমন ঘটনা ঘটেছেন ।

তিনি বলেন, এমন নৃশংস ঘটনার মুখোমুখি আগে কখনো হইনি। হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা আবদুর রহমান ও সোলেমানের বন্ধু খলিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় নতুন মামলার বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

আরও পড়ুন>>

>>> মেয়েকে হত্যার ৪ দিন পর বাবাকেও একইভাবে হত্যার চেষ্টা

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।