মৌলভীবাজার: ‘বাংলা মাছ’ বলে একটি শব্দ চলমান রয়েছে। মৎস্য সংশ্লিষ্টরা অর্থাৎ মাছ চাষি, মাছ খামারি, মাছ ব্যবসায়ী ও মাছ বিপণনকর্মীদের মধ্যে এ বাংলা মাছ অধিক প্রচলিত।
কোনো কোনো স্থানে মিরকা বা মির্গা নামেও এ মাছটির অধিক পরিচিত রয়েছে। এ মাছটি নদী, হাওর কিংবা পুকুরসহ বিভিন্ন জলাশয়ের নিচু স্তরের মাছ। পানির উপরে অর্থাৎ পানির উপরের স্তরের কাছাকাছি এ মাছগুলো সাধারণত উঠে আসে না। নিচেই ওরা ঘুরে ঘুরে খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে।
এ মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Cirrhinus cirrhosus। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় মাছটির সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৮০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সর্বত্র নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়, পুকুর ও প্লাবনভূমিতে মৃগেল মাছ পাওয়া যায়।
উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারাজুল কবির বাংলানিউজকে বলেন, মৃগেল সুস্বাদু মাছ। এরা জলাশয়ের তলদেশের স্তর থেকে খাদ্যগ্রহণ করে। প্রাণী-প্লাংকট, তলার ছোট-বড় কীটপতঙ্গ, পচা জৈব্য পদার্থ, কাঁদা, বালি ইত্যাদি মৃগেল মাছের খাদ্য। সম্পূরক খাদ্য হিসেবে চালের কুঁড়া, ফিসমিল, গমের ভুষি, সরিষার খৈল প্রভৃতি খায়।
পরিপক্বতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মৃগেল মাছ এক বছর বয়সেই পরিপক্ব হয়। তবে আবার কারো কারো মতে, এ মাছ ছয় মাসেই পরিপক্ব হয়ে থাকে। এটা অনেকটাই পরিপূর্ণ ও সুষম খাদ্যের উপর নির্ভলশীল। একই বয়সের পুরুষ মাছ স্ত্রী মাছের তুলনায় অপেক্ষাকৃত আগে পরিপক্বতা অর্জন করে।
প্রজনন সম্পর্কে এ কর্মকর্তা বলেন, পরিণত বয়সের এক কেজি ওজনের একটি মৃগেল মাছ থেকে এক লাখ ডিম পাওয়া যেতে পারে। এ মাছ বদ্ধ জলাশয়ে ডিম পাড়ে না। মে-জুলাই মাসে স্রোতযুক্ত নদীতে ডিম দেয়। এপ্রিল মাস থেকেই কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে রেণু উৎপাদন করতে দেখা যায়।
স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি, যারা ডায়েট কন্ট্রোল করছেন, তারা পুরোপুরিভাবে খাদ্য তালিকায় মাংসকে বেছে না নিয়ে মাংসের পরিবর্তে মৃগেল মাছ বেছে নিতে পারেন। এ মাছের তেল অত্যন্ত উপকারী ফলে আমাদের হার্টের রক্তনালিতে চর্বি জমতে পারে না এবং রক্তনালি পরিষ্কার, সংকীর্ণমুক্ত থাকা। ফলে আমাদের হৃদযন্ত্রের রক্ত চলাচল ভালো থাকে বলে জানান এ সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২১
বিবিবি/আরবি