ঢাকা, রবিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

দুই’শ বছরের শ্মশানে দিপালীর প্রস্তুতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২১
দুই’শ বছরের শ্মশানে দিপালীর প্রস্তুতি ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: প্রাচীনতম ও উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ বরিশাল মহাশ্মশানে দিপালী উৎসবকে কেন্দ্র করে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।

এরইমধ্যে মৃত স্বজনদের সমাধিস্থল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে রং করার পাশাপাশি গোটা শ্মশান এলাকাকে ঘিরে চলছে কর্মযজ্ঞ।

বুধবার (৩ নভেম্বর) সুষ্ঠুভাবে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীরে্যর মধ্য দিয়ে বৃহৎ এ শ্মশানে দিবালী উৎসব পালনে কমিটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সার্বিক প্রস্তুতি।

ওই দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি ও প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে পুরো মহাশ্মশান এলাকা।

মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল মহাশশ্মনা ঘুরে দেখা গেছে, মৃত স্বজনদের বেশিরভাগ সমাধি ধোয়া-মোছা, পরিষ্কার ও রং করার কাজ শেষ। তবে কেউ কেউ এ কাজ এখনো করছেন। সে সঙ্গে কমিটির পক্ষ থেকে শশ্মানের ভেতরের সড়কগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি রোড লাইটগুলো চেক করা হচ্ছে।

শ্মশান কমিটির তথ্যানুযায়ী, এ শ্মশানে কাঁচা-পাকা মিলিয়ে প্রায় ৬৫ হাজার সমাধি রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৯শত সমাধি। যাদের স্বজনরা এ দেশে থাকেন না। সেসব সমাধিগুলোকে হলুদ রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সমাধিগুলোতে কমিটির উদ্যেগে দিপালী উৎসবের দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি, ধূপকাঠি ও প্রদীপ প্রজ্বলন করা হবে।

বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার বাংলানিউজকে বলেন, ২শত বছরের অধিক সময় ধরে এ মহাশ্মশানে দিপালী উৎসব অনাড়ম্বর পরিবেশে পালিত হচ্ছে। দিন যতো যাচ্ছে আয়োজনের পরিধি ততোই যেন বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপালসহ বিদেশ থেকে এখানে মানুষে আসে দিপালীর এ সময়টাতে।

তিনি বলেন, মহামারি করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আমরা প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপই গ্রহণ করেছি। শ্মশানের মূল ফটকেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হবে। সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে শ্মশানে অবস্থান ও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।


বরিশাল মহানগর পূজা উপদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি গোপাল সাহা বাংলানিউজকে বলেন, এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ দিপালী আয়োজন এখানেই হয়ে থাকে। এ দিন সন্ধ্যায় আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে মহাশ্মশান। দিপালীর আয়োজনকে ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে যে যার অবস্থান থেকে সর্বাত্মক সহযোগীতা আমাদের করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।

প্রসঙ্গত, ৫ একর ৯৬ শতাংশের এ বরিশাল মহাশ্মশানে প্রতিবছর শ্মশান দিপালী উৎসবে লাখো মানুষের সমাগম হয়। কেউ দিপালীর আয়োজন দেখতে আসেন আবার কেউ স্বজনদের সমাধিতে মোমবাতি, প্রদীপ প্রজ্বলন করেন, আবার কেউ মৃত স্বজনদের প্রিয় খাদ্য দিয়ে স্মরণ এবং আত্মার শান্তি কামনা করেন।

কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যামনন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশ বিরোধী নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, মনোরমা বসু মাসিমাসহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি রয়েছে এ মহাশ্মশানে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২১
এমএস/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।