ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লঞ্চে আগুন: চালককে দায়ী করছেন যাত্রীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
লঞ্চে আগুন: চালককে দায়ী করছেন যাত্রীরা

বরিশাল: এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর যদি দ্রুত লঞ্চটিকে নদী তীরে নোঙর করা যেতো তবে এতো হতাহতের ঘটনা ঘটতো না বলে দাবি করেছেন যাত্রীরা।

মুনুসুর নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ বাংলানিউজকে জানান, ‘নলছিটির পরপরই লঞ্চটিতে আগুন লাগে।

তখনও এর মাত্রা প্রকট ছিল না। যাত্রীরা লঞ্চটিকে তীরে নিতে স্টাফদের গালমন্দও করেছে। তবে চালক কিছুটা তীরে নিয়ে আবার লঞ্চটিকে নদীর মধ্যে নিয়ে আসেন। এ সময় আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে, বেশিরভাগ নদীতে ঝাঁপ দেয়।

লঞ্চের যাত্রী আব্দুল্লাহ বলেন, যারা ঝাঁপ দিতে পারেনি বা যারা সাঁতার জানেন না তারা পুড়েই অঙ্গার হয়ে গেছেন। যদি লঞ্চটিকে কোনোভাবে সঙ্গে সঙ্গে তীরে নেওয়া যেতো তাহলে এতো লোক মারা যেতো না।

রিনা নামে অপর এক যাত্রী জানান, পুরো লঞ্চে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে কাউকে দেখা যায়নি। হয়তো তাদের আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত সরঞ্জামই ছিল না।

এদিকে ঘটনাস্থলে লঞ্চটি পরিদর্শনে এসে বিভাগীয় কমিশনার বাংলানিউজকে বলেন, প্রত্যক্ষদর্শী ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের চালকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে তাতে চালকের অদক্ষ ছিল হয়তো। তবে পুরো ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এছাড়া যারা আহত নিহত হয়েছেন তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।

এছাড়া শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট থাকায় আমি ঢাকায় বার্ন হাসপাতালে কথা বলে রেখেছি। বরিশালে যতটা সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পরিদর্শনকালে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে ছিলেন।

এদিকে ভোর থেকে নদীতে তল্লাশি করে লঞ্চের ৯ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। এর মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু তিনজন করে জানিয়েছেন বরিশাল কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট আহম্মেদ অনাবিল। তিনি জানান, কোস্টগার্ডের মোট পাঁচটি টিম কাজ করছে এখানে। যেসব মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তাদের পায়ের অংশ কিছুটা ঝলসে গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে লঞ্চের ডেকগুলো প্রচুর গরম হয়েছিল।

এদিকে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক বেল্লাল উদ্দিন বলেন, তাদের প্রায় ১০টি ইউনিট কাজ করছে এখানে। এ পর্যন্ত তারা ৩৭টি মরদেহ উদ্ধার করেছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেলা ২টা পর্যন্ত ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। তবে আগুনে দগ্ধ ৩০ জনের বেশিরভাগেরই পরিচয় জানা কঠিন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা।

>>> পুড়ে অঙ্গার ৩৩টি মরদেহ, মৃত্যু বেড়ে ৩৭
>>> আগুন লাগার জন্য যাত্রীদেরই দায়ী করলেন লঞ্চমালিক

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
এমএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।