ঢাকা: ২০২১ সালে ৩৮ জন গৃহকর্মী নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জন নিহত, ২৪ জন আহত এবং ২ জন আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংস্থাটি।
বিলস্ এর জরিপ অনুযায়ী, নিহত গৃহকর্মীদের মধ্যে ৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং ৮ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৫ জন, ছুরিকাঘাতের শিকার ৫ জন, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩ জন, যৌন নিপীড়নের শিকার ১ জন এবং ধর্ষণ পরবর্তী আত্মহত্যা করেন ১ জন। এছাড়া কর্মক্ষেত্রের বাইরে ৩ জন গৃহশ্রমিক নিহত হন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঢাকাসহ সারাদেশে যারা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে তাদের ৯৫ ভাগেরও বেশি নারী। বিলস্ এর জরিপে দেখা গেছে যারা হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তাদের অধিকাংশের বয়স ১০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।
বিলস্ জানায়, এর এই হিসাব দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তির ওপর নির্ভর করে করা হলেও বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। কারণ অনেক নির্যাতনের ঘটনায় অর্থ ও চাপের মুখে সমঝোতা করা হয়। গৃহকর্মী বা তাদের পরিবারের সদস্য অর্থনৈতিকভাবে দুবর্ল হওয়ার কারণে মামলা মোকদ্দমায় যেতে চান না বা যেতে সাহস পান না। অনেক সময় প্রভাবশালীরা নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে ফেলেন।
বিলস্ সুনীতি প্রকল্প এবং গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের উদ্যোগে এই সমস্ত ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া মনিটরিং সেলের মাধ্যমে ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা, ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে যোগাযোগ এবং সার্বিক সহায়তা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
এছাড়া গৃহশ্রমিক নির্যাতন প্রতিরোধে বিলস্ গৃহশ্রমিক কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা ২০১৫ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান, গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে বিলস্।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
এইচএমএস/আরএ