ঢাকা: ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে বাংলাদেশ। সেখানে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সরকারের নীতি নির্ধারকরা।
প্রভাব পড়তে পারে দেশের জ্বালানি খাতে: ইউক্রেনে পরিস্থিতি আরও অশান্ত হলে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোপের প্রায় ৪০ ভাগ জ্বালানি তেল- গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। আর রাশিয়া যদি ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তাহলে ইউরোপ বিকল্প জ্বালানির জন্য ঝুঁকবে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। আর বাংলাদেশ যেহেতু মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি আমদানি করে থাকে, সে কারণে সঙ্কট দেখা দিতে পারে। ফলে অতিরিক্ত মূল্যে জ্বালানি তেল কেনাও লাগতে পারে।
মোকাবিলা করতে হবে বৈশ্বিক প্রভাবও: ইউক্রেন পরিস্থিতি ঘিরে পুরো বিশ্বের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। জ্বালানি তেল ছাড়াও অর্থনীতি, বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বাজার বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এসব কারণে দুশ্চিন্তায় আছে বাংলাদেশও।
নিরপেক্ষ নীতি বাংলাদেশের: বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশ প্রভাবশালী দেশ না হলেও ইউক্রেন ইস্যুতে নিরপেক্ষ থাকতে চায় ঢাকা। ইউক্রেনকে ঘিরে বিশ্বে যে প্রভাবশালী দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে, উভয়পক্ষের সঙ্গেই বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব গভীর। সে কারণে শুধুমাত্র কোনো একটি পক্ষের সঙ্গেই থাকতে চায় না ঢাকা। উভয়পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বাংলাদেশ।
শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রত্যাশা: ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ নিজের অবস্থান সুস্পষ্ট ঢাকা। সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ঢাকা। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে এই অঞ্চলের সঙ্কট শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন একটি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান হতে পারে। সংলাপ ও সহযোগিতা সমুন্নত রেখে এই সঙ্কট নিরসনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য: পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলে ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে রাশিয়া। ফলে ইউরোপকে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে। আর এর প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের ওপরও। উভয় পক্ষেরই আলোচনা মাধ্যমে ইউক্রেন সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
টিআর/এমএমজেড